ভ্যালেন্টাইন মাসে এখন প্রেমের ভরা মরশুম। ভালোবাসার উৎসবে গা ভাসিয়েছেন নতুন থেকে কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ যুগলেরাও। চারপাশে চকোলেট, টেডি, গোলাপ সহ উপহারের জোয়ার বইছে। এমনকী সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শহরের রাজপথ, সর্বত্র উপচে পড়ছে প্রেমবার্তা। তবে এমন আনন্দের ভিড়েও ঘুরে বেড়ায় কিছু বুক চাপা দীর্ঘশ্বাস। মনের মতো পার্টনার জীবনে থাকলেও অনেকেরই আফসোস, সে বড়ই আনরোম্যান্টিক। গোলাপ দিয়ে ভালোবাসার কথা বলতে যার বড় কষ্ট।
এমন অসুখী প্রেমিক প্রেমিকাদের সান্ত্বনা দিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরস্থিতিতে সেই বিশেষ মানুষটার দোষ খুঁজে লাভ নেই। বরং আসল যে খলনায়ক, অর্থাৎ লাভ হরমোনের খেলাকে নিজের হাতে নিয়ন্ত্রণ করুন। তবেই খেলা ঘুরে যাবে। আর বিশেষজ্ঞরাও মেনে নিয়েছেন নচিকেতার লেখা সেই গানের কথাগুলি, ‘ভালোবাসা আসলেতে পিটুইটারির খেলা, আমরা বোকারা বলি প্রেম।’ বিজ্ঞানও বলছে সেই একই কথা!
বিশেষ হরমোনের অভাবেই নাকি প্রিয় মানুষটির মনে এমন বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে বয় না কোনও আবেগের ফল্গুধারা। মূলত লাভ হরমোনের কারসাজিতেই এমন ঘটনা ঘটে থাকে। তাই তো চটজলদি প্রিয় মানুষের ডায়েটে বশ কিছু বদল আনতে হবে। তাতেই প্রেমের শুষ্ক ভূমিতে আসবে প্রেমের বান।
প্রেমকে আমরা আবেগ বলে বর্ণনা করলেও বিজ্ঞান বলছে সবই হরমোনের খেলা। ভালোবাসা, কামনা, বাসনা- এসব কিছুর পিছনেই কলকাঠি নাড়ছে একাধিক হরমোন। বিশেষ করে অক্সিটোসিন হরমোন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই হরমোনের ঘাটতিতে অসুখী, আবেগহীন হয়ে ওঠে মন। তাই জীবনে রোমান্স চাইলে পার্টনারের দেহে অক্সিটোসিনের মাত্রা বাড়াতে হবে, তাতেই হবে ম্যাজিক। আর ঠিক এই কাজটাই করতে পারবে বিশেষ কিছু খাবার।
লাল টুকটুকে তরমুজই করবে ম্যাজিক: শরীরে হ্যাপি ও লাভ হরমোনের ক্ষরণ বাড়াতে সিদ্ধহস্ত এই ফল। এমনকী শরীর বাবাজিকে ডিটক্স করার পাশাপাশি এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অক্সিটোসিনের পরিমাণ বাড়াতে নানাভাবে সাহায্য করে।
পিছিয়ে নেই কলাও: কলাকে ছোট করে দেখবেন না। কারণ ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, কপার, রাইব্লোফ্ল্যাবিন সহ একাধিক পুষ্টিকর উপাদানের সন্ধান মেলে কলায়। তাই প্রেমের সন্ধান পেতে এই ফলকে জায়গা করে দিন পাতে।
ডার্ক চকোলেট: প্রেমের জীবনে ইতিবাচক বদল আনতে ডায়েটে অবশ্যই রাখুন ডার্ক চকোলেট। সেই সঙ্গে পালং শাক, চিয়া সিড, ড্রাই ফ্রুটস, স্যালমন মাছ, ডুমুর, ব্লুবেরির মতো খাবারও থাকুক পাতে। তাতে শরীরে লাভ হরমোনের কার্যকারিতা বাড়বে।
ডায়েটে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি যোগাসন, মিউজিক থেরাপি এবং বডি ম্যাসাজেও অক্সিটোসিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। তাই এসব দিকেও নজর রাখুন। তবে কেউ যদি ভাবেন এই হরমোনের মাত্রা বাড়লেই পার্টনার একেবার পর্দার নায়ক-নায়িকা হয়ে উঠবেন, ব্যাপারটা কিন্তু তেমন নয়। তবে আবেগের সুক্ষ্ম অনুভূতিগুলি ঠোঁটের কোনায় দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিফলিত হবে কাজেও। তাই ভ্যালেন্টাইন উইকে জীবনে রোমান্সের ঢেউ ফেরাতে নজর রাখুন ডায়েটে।