গেজেট বড্ড প্রিয় তার। আইফোন সবচেয়ে প্রিয়। একটা আইপ্যাড কিনলেও তো বেশ হয়। কিন্তু সঙ্গতি কোথায়? ও দিকে শখ যে পূরণ করতেই হবে। তাই শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গই বিক্রি করে দিয়েছিলেন ওয়াং শাংকুন। কিডনি বিক্রির অর্থে কিনেছিলেন আইফোন ৪ এবং আইপ্যাড। এখন জীবন-মরণ সমস্যায় চিনের হুনান প্রদেশের বাসিন্দা ওয়াং। একটি হাসপাতালে তার ডায়ালিসিস চলছে।
২০১১ সাল। ওয়াংয়ের বয়স তখন ১৭ বছর। তখন বাজার মাত করছে আইফোন ৪ এবং আইপ্যাড ২। ওয়াংয়েরও ইচ্ছা হয়েছিল আইফোন এবং আইপ্যাড কেনার। পকেটে ইউয়ান না থাক, শরীরে কিডনি তো আছে। এই ভেবে মারাত্মক পদক্ষেপ করেন তিনি। অনলাইনে যোগাযোগ করেন অঙ্গ পাচারকারী কিছু লোকজনের সঙ্গে। তার পর তাদের বলে দেওয়া একটি হাসপাতালে গিয়ে অবৈধ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাদ দিয়ে দেন একটি কিডনি। হাতে মোটা অঙ্কের ইউয়ান পেয়ে গিয়েছিলেন। খানিক সুস্থ হয়েই ছোটেন আইফোনের শোরুমে।
শখ পূরণ হলো। কিন্তু শরীরের অপূরণীয় ক্ষতি করে ফেললেন চীনা তরুণটি। এখন তিনি যুবক। ৩১ বছর বয়সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কার্যত মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
কিডনি বিক্রির কিছু দিনের মধ্যেই শরীরে নানা অসুখ ধরা পড়ে ওয়াংয়ের। কয়েক মাসের মধ্যে শরীরের ভিতর ঘা ধরা পড়ে। শরীরে বাকি থাকা একটি কিডনি বিকল হওয়ার পথে। ২৫ শতাংশ কাজ করছে সেটি। বর্তমানে নিয়মিত ডায়ালিসিস চলছে চীনা যুবকের। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি যত দিন বাঁচবেন, তত দিন ওষুধপত্র আর নিয়মিত চিকিৎসার ভরসাতেই থাকতে হবে।
চীনা যুবকের এই পরিণতির দুটো দিক রয়েছে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, অবৈধ এবং অবৈজ্ঞানিক ভাবে অঙ্গ বিক্রির পরিণাম কী হতে পারে, ওয়াংয়ের ঘটনা তার একটি মস্ত উদাহরণ। আবার যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ভোগবাদী পণ্যের প্রভাব কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, সেটাও চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন চীনা যুবক।