
রকিব হাসান (১২ ডিসেম্বর ১৯৫০-১৫ অক্টোবর ২০২৫)। ছবি: সংগৃহীত
তিন গোয়েন্দা সিরিজের লেখক রকিব হাসান ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
রকিব হাসানের বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি দীর্ঘদিন কিডনি রোগে ভুগছিলেন। রকিব হাসানের ছেলে রাহিদ হাসান জানিয়েছেন, ডায়ালাইসিসের জন্য আজ দুপুরে বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন। ডায়ালাইসিসের পরপরই তিনি মারা যান।
রকিব হাসানের দুটি কিডনিতেই সমস্যা হয়েছিল জানিয়ে ছেলে রাহিদ বলেন, তিন মাস ধরেই তার বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল।
রাহিদ হাসান জানান, রাজধানীর বাসাবোতে তার বাবার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বাসাবোর একটি কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
রকিব হাসানের বিশেষ পরিচয় গোয়েন্দাকাহিনির লেখক হিসেবে। তিন গোয়েন্দার জন্য তিনি একনামে পরিচিত বাংলাদেশের পাঠকের কাছে। সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত তিন গোয়েন্দা সিরিজ বাংলাদেশের কয়েক প্রজন্মের পাঠকের কাছে জনপ্রিয়। তার লেখা তিন গোয়েন্দা সিরিজটি এক জরিপে বাংলাদেশের কিশোরদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাঠযোগ্য সিরিজ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। রকিব হাসান অনুবাদ করেছেন ব্রাম স্টোকারের ড্রাকুলা, এরিক ফন দানিকেন, ফার্লে মোয়াট, জেরাল্ড ডুরেল-এর মতো বিখ্যাত লেখকদের অনেক ক্লাসিক বই।
জন্ম ১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর, কুমিল্লায়। বাবার চাকরিসূত্রে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখানে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও বাঁধাধরা জীবনে মন টেকেনি, বেছে নেন লেখালেখি। সেবা প্রকাশনী থেকে তার লেখকজীবনের সূচনা। পাশাপাশি সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন ‘রহস্যপত্রিকা’য়। প্রথম দিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করেছেন। এরপর লিখে গেছেন ‘টারজান’, ‘গোয়েন্দা রাজু’, ‘আরব্য রজনী’, ‘রেজা-সুজা’ সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই। তবে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজ বা কিশোর, মুসা ও রবিনের মতো চরিত্রগুলোর স্রষ্টা হিসেবে। ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজটি বাংলাদেশের অসংখ্য পাঠকের কৈশোরের সঙ্গী। ফলে পাঠকের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন লেখক নন, কয়েক প্রজন্মের ভালোবাসার মানুষ।
পালাবদল/এসএ