
সংগৃহীত ছবি
ঢাকা: নিম্নমানের খাদ্যপণ্য উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাত করার অভিযোগে নেসলে বাংলাদেশ ও মেঘনা সুগার রিফাইনারি লিমিটেডের তিন শীর্ষ কর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ঢাকার একটি আদালত।
বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত-২ এর বিশেষ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত সাহারা বিথি গত সোমবার এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
ওই দিনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খাদ্য পরিদর্শক কামরুল হাসান নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩- এর বিভিন্ন ধারায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান দুটির তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন-নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিবাল আবে বিক্রমা, একই প্রতিষ্ঠানের পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রিয়াসাদ জামান ও মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল।
কামরুল জানান, নেস্লের পণ্য কিটক্যাট ও মেঘনা গ্রুপের উৎপাদিত চিনির গুণগত মান নিয়ে নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩- এর ২৬, ৩১, ৩৮ ও ৩৯ ধারায় তিনি দিবাল ও রিয়াসাদের বিরুদ্ধে একটি এবং ২৩ ও ২৬ ধারায় মোস্তফার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন।
তিনি বলেন, “আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ হিসেবে ১৫ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছেন আদালত।”
নেসলে বাংলাদেশের কোম্পানি সচিব ও লিগ্যাল, রেগুলেটরি অ্যান্ড সায়েন্টিফিক অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক দেবব্রত রায় চৌধুরী বলেন, 'মামলাটি ভুল ভিত্তিতে করা হয়েছে। কিটক্যাট আমদানি করা পণ্য হওয়ায়, নেস্লে আমদানির পুরো প্রক্রিয়ায় মান নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। এবং সব ধরনের পরীক্ষা–নিরীক্ষার পরই এটি বাজারজাত করে।”
তিনি বলেন, “কিটক্যাট একটি চকোলেট–কোটেড ওয়েফার। অথচ এটিকে হয় চকোলেট, নয়তো ওয়েফার বিস্কুট ধরে অননুমোদিত একটি ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। চকোলেট–কোটেড ওয়েফারের জন্য বিএসটিআই–এর কোনো আনুষ্ঠানিক মানদণ্ড নেই।”
দেবব্রত আরও জানান, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পণ্যটি ছাড়পত্র দেয়। যেখানে খাদ্য নিরাপত্তা আইনের আওতায় মানব ভক্ষণে উপযোগী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা দেশের আইনকে সম্মান করি। যথাসময়ে আমাদের অবস্থান প্রমাণ করব।”
এমজিআই চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, “আমরা আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী আদালতে উপস্থিত হব এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।”
এমজিআই–এর জ্যেষ্ঠ জেনারেল ম্যানেজার কাজী মহিউদ্দিন বলেন, “বিএসটিআইয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমাদের চিনির সুক্রোজ মাত্রা তাদের মানদণ্ডের মধ্যেই রয়েছে। বিষয়টি কীভাবে এলো, আমরা বুঝতে পারছি না। তারপরও আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সব প্রমাণ উপস্থাপন করব।”
পালাবদল/এসএ