
সংগৃহীত ছবি
ঢাকা: ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য ৯ নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নির্দেশনা আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়ন করে বিবাদীদের আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ৩০ নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। 
গতকাল বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ঊর্মি রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত বিষয়ে করা সম্পূরক আবেদন শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন। এ সময় আদালত বায়ুদূষণের পরিস্থিতি ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ। পরিবেশের পক্ষে আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন, উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী মো. শাহজাহান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী খসরুজ্জামান এবং ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুরশিদ আক্তার। পরে মনজিল মোরসেদ জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বায়দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়। আবেদনে শুনানি নিয়ে ঢাকার বায়ুদূষণ বন্ধে আদালতের ৯ দফা নির্দেশনা ৩ সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। শুনানিতে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, এরইমধ্যে আদালতের নির্দেশনা অনুসারে কতিপয় পদক্ষেপ গ্রহণ করায় গত বছর ঢাকায় বায়ুর মান উন্নীত হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে বিবাদীপক্ষ থেকে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ঢাকার বায়ু দূষিত হয়েছে। ফলে বায়ুর মধ্যে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করে বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের রিপোর্টের তথ্য মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং ঢাকায় বসবাসরত মানুষের জীবন রক্ষার্থে জরুরি ভিত্তিতে বিবাদীদের ওপর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া প্রয়োজন। 
ঢাকার বায়ুদূষণ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে রিট করলে ২০১৯ সালের ২৯শ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করে। ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি ৯ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়। এরমধ্যে অন্যতম হলো ঢাকা শহরে মাটি/বালি/বর্জ্য পরিবহনকৃত ট্রাক ও অন্যান্য গাড়িতে মালামাল ঢেকে রাখা, নির্মাণাধীন এলাকায় মাটি/বালি/সিমেন্ট/পাথর/নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, সিটি করপোরেশন কর্তৃক রাস্তায় পানি ছিটানো, রাস্তা/ কালভার্ট/ কার্পেটিং/খোঁড়াখুঁড়ি কাজে টেন্ডারের শর্ত পালন নিশ্চিত করা। এ ছাড়া কালো ধোঁয়া নিঃসরণকৃত গাড়ি জব্দ করা, সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে গাড়ির চলাচল সময়সীমা নির্ধারণ ও উত্তীর্ণ হওয়া সময়সীমার পরে উক্ত গাড়ি চলাচল বন্ধ করা, অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করা, পরিবেশ লাইসেন্স ব্যতীত চলমান সকল টায়ার ফ্যাক্টরি বন্ধ করা, মার্কেট/ দোকানগুলোতে প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যাগ ভরে রাখা এবং অপসারণ নিশ্চিত করতে সিটি করপোরেশনের পদক্ষেপ নেয়া।
পালাবদল/এসএ