জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাস ও আশেপাশের জলাধারগুলোর জলজ জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও এদের বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্য শৃঙ্খল টিকিয়ে রাখতে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জালের ব্যবহার বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
গত রোববার এক চিঠির মাধ্যমে এই অনুরোধ জানায় বেলা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশের জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত 'জীববৈচিত্র্য মরণফাঁদে জড়িয়ে' শীর্ষক সংবাদ বেলার দৃষ্টিগোচর হয় এবং উদ্বেগের সৃষ্টি করে। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ও আশেপাশে বিদ্যমান জলাধারগুলোতে চায়না দুয়ারি নামক নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করা হচ্ছে। মূলত সিন্ধুরিয়া, মিরেরটেক, ডেইরি ফার্ম, বিশমাইল লেক ও আশেপাশের অন্যান্য জলাধারগুলোতে এসব জালের ব্যবহার অধিক পরিলক্ষিত হচ্ছে। অতি সূক্ষ্ম ফাঁসের এ জালে আটকে জলজ জীববৈচিত্র্য ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে। এ জালে প্রতিনিয়ত সাপ, ব্যাঙ, পোনা মাছসহ নানা ধরনের জলজ প্রাণী ও কীটপতঙ্গ আটকে যাচ্ছে এবং জাল থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে শরীর ছিঁড়ে ধীরে ধীরে যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু ঘটছে।
এতে আরও বলা হয়, খাদ্যের জন্য মাছের ওপর নির্ভরশীল দেশীয় ও পরিজায়ী পাখি বিশেষ করে মাছরাঙা ও বক আটকে যাচ্ছে এসব জালে। ফলশ্রুতিতে জলজ জীববৈচিত্র্যের খাদ্য শৃঙ্খল ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাস্তুতন্ত্র। প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে থাকা লেকগুলো ইজারা প্রদান করা হয়েছে এবং ইজারাগ্রহীতারা এসব জাল ব্যবহার করছে। ইজারা বর্হিভূত জলাধারগুলোতে খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী-কর্মকর্তারা নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহার করছে মর্মেও সংবাদে উল্লেখ রয়েছে।
বেলা জানায়, দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী সাড়ে ৪ সেন্টিমিটারের চেয়ে ছোট ফাঁসবিশিষ্ট জাল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং তা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
এই অবস্থায় বেলা জাবি ক্যাম্পাস ও আশেপাশের জলাধারগুলোতে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জালের ব্যবহার বন্ধের পাশাপাশি এই জাল ব্যবহারের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছে।