‘ভালোবাসি’ বলাটা কোনও ভাবেই যৌন হেনস্থা নয়। পকসো আইনের এক মামলার শুনানিতে এমনই পর্যবেক্ষণ ভারতের বম্বে হাই কোর্টের। শুধু তা-ই নয়, নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে ওই যুবকের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
স্কুল থেকে ফেরার পথে ১৭ বছর বয়সি নাবালিকার পথ আটকে হাত ধরে অভিযুক্ত যুবক বলেছিলেন, “আমি তোমাকে ভালোবাসি!” নিজের ভালোবাসার কথা জাহির করার পরই নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে শ্রীঘরে ঠাঁই হয় ওই যুবকের! নিম্ন আদালতে পকসো আইনে দোষী সাব্যস্তও হন তিনি। কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই মামলা গড়ায় হাই কোর্ট পর্যন্ত। সোমবার উচ্চ আদালত জানায়, ‘ভালোবাসি’ বলাটা কোনও ভাবেই যৌন হেনস্থা নয়। ভালোবাসি বলাটা কেবল অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ। এর নেপথ্যে কোনও ‘যৌন অভিপ্রায়’ থাকতে পারে না।
বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চে ওই পকসো আইন মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি ঊর্মিলা জোশীর বেঞ্চ অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করার নির্দেশ দেয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কোনও যৌন কার্যকলাপের মধ্যে রয়েছে জোরপূর্বক পোশাক ধরে টানাটানি, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি বা কোনও মহিলাকে অশালীন মন্তব্য করার বিষয়গুলি। কেউ যদি কাউকে ‘ভালোবাসি’ বলে সেটা যৌন হেনস্থা নয়।
ঘটনাটি ২০১৫ সালের। নাবালিকার অভিযোগ, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে অভিযুক্ত তাকে যৌন নির্যাতন করেন। অভিযোগে সে উল্লেখ করেছিল, ওই যুবক তাকে পথ আটকে ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ বলেছিলেন। বাড়ি ফিরে কিশোরী তার বাবাকে বিষয়টি জানায়। তার পরেই থানায় ওই যুবকের নামে এফআইআর দায়ের হয়। তদন্তে নেমে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১৭ সালে নাগপুরের দায়রা আদালত ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং পকসো আইনের অধীনে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। সেই বিষয়টি গড়ায় হাই কোর্টে। শুনানিতে উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’র মতো শব্দ বা বাক্যগুলো যৌন নির্যাতনের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত শব্দের সমতুল্য নয়।