ঢাকা: : অসংখ্য কালজয়ী গানের সংগীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী। দীর্ঘ সংগীত জীবন, বর্ণাঢ্য সংগীত যাত্রা শিল্পীর। আজ গুণী এই শিল্পী ৮৫ বছরে পা রাখলেন।
জন্মদিনেকে তিনি বলেন, শুধু শিল্পীদের ক্ষেত্রেই না, প্রত্যেক মানুষেরই নিয়মের সঙ্গে চলা উচিত। তবে এই পেশার সঙ্গে যারা আছেন, তাদের সবসময় নিয়মকানুন মেনে চলা সম্ভব হয় না। কিন্তু, তারপরও যতটুকু সম্ভব তা মেনে চলা প্রয়োজন।
শিল্পী হিসেবে নিজের আত্মতৃপ্তির বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে একজন শিল্পী হিসেবে কতোটা তৃপ্ত, সেটা বলাটা খুবই মুশকিল। আমার মনে হয়, কোনো শিল্পীই তৃপ্ত হয় না। কারণ, তৃপ্ত হয়ে গেলে তো সবই শেষ হয়ে গেল। বরং উল্টো করেই বলি, আমার তেমন অতৃপ্তি নেই। আমার কাছে সবচেয়ে বড় হলো মানুষের ভালোবাসা।
১৯৪০ সালের ১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ আব্দুল হাদী। এরপর জীবনের বিভিন্ন সময় কাটে আগরতলা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কলকাতায়। শিল্পীর কলেজ জীবন কেটেছে রংপুর ও ঢাকায়।
সৈয়দ আব্দুল হাদী ১৯৬০ সালে ছাত্র জীবন থেকেই সিনেমায় গান করেন। তিনি ১৯৬৪ সালে প্রথম ‘ডাক বাবু’ সিনেমায় গান করেন। মো. মনিরুজ্জামানের গীতরচনায় আলী হোসেনের সুরে গানটি গেয়েছিলেন।
চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকের জন্য পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। প্রথমবার পেয়েছিলেন ১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ সিনেমার জন্য। এরপর সুন্দরী (১৯৭৯), কসাই (১৯৮০), গরীবের বউ (১৯৯০) ও ক্ষমা (১৯৯২) সিনেমার জন্য পুরস্কার পান তিনি। ২০০০ সালে সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
তার গাওয়া অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গানের কয়েকটি হলো-‘যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে’, ‘সূর্যোদয়ে তুমি’, ‘চোক্ষের নজর এমনি কইরা’, ‘এমনও তো প্রেম হয়’, ‘কেউ কোনোদিন আমারে তো কথা দিল না’, ‘সখী চলো না’, ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’, পৃথিবীর পান্থশালায়’, ‘একদিন চলে যাবো’, ‘আমি তোমারই প্রেম ভিখারি’, ‘কথা বলবো না’, ‘যেও না সাথী’, ‘চলে যায় যদি কেউ’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘আছেন আমার মোক্তার’, ‘মনে প্রেমের বাত্তি জ্বলে’, ‘চোখ বুজিলে দুনিয়া আন্ধার’, আউল বাউল লালনের দেশে’, ‘বিদ্যালয় মোদের বিদ্যালয়’, ‘এ জীবনে তুমি ওগো এলে’, ‘মনে প্রেমের বাত্তি জ্বলে’।