
গত সোমবারের ভূমিকম্পে হাচিনোহে শহরের ফুটপাতে ভেঙে পড়া গেট। ছবি: এএফপি
জাপানের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। শুক্রবার এই ভূমিকম্প হয় বলে জানায় স্থানীয় আবহাওয়া দপ্তর।
মাত্র কদিন আগে একই এলাকায় ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছিলেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির সংবাদে বলা হয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর উপকূলে সর্বোচ্চ এক মিটার উচ্চতার সুনামি ঢেউ আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাপানের আবহাওয়া দপ্তর (জেএমএ)।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, হোনশু দ্বীপের ইওয়াতে অঞ্চলের কুজি শহর থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দূরে এই ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি হয়।
জাপানি সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে জানায়, গত সোমবার রাতের বড় ভূমিকম্পের তুলনায় এবার কম্পন কম ছিল। ওই ভূমিকম্পে তাক থেকে জিনিসপত্র পড়ে যায়, সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, জানালা ভেঙে যায়। ভূমিকম্পের পর ৭০ সেন্টিমিটার উচ্চতার সুনামি ঢেউ দেখা গিয়েছিল।
দেশটির পারমাণবিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, ওই অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে তাৎক্ষণিক কোনো অস্বাভাবিকতা পাওয়া যায়নি।
সোমবারের ভূমিকম্পের পর জেএমএ এক বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করে জানিয়েছিল, এক সপ্তাহের মধ্যে একই মাত্রা বা তার চেয়েও বড় ভূমিকম্প হতে পারে।
২০১১ সালে ঘটে যাওয়া ৯ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামিতে প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ মানুষ নিহত বা নিখোঁজ হন।
২০২৪ সালের আগস্টে জেএমএ এক বিশেষ সতর্কবার্তা দেয়। এতে জাপানের প্রশান্ত মহাসাগর-সংলগ্ন দক্ষিণাঞ্চলে নানকাই ট্রাফ বরাবর বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কার কথা বলা হয়।
৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমুদ্রখাতেই ফিলিপাইন সাগরের টেকটোনিক প্লেট ধীরে ধীরে জাপানের নিচে থাকা মহাদেশীয় প্লেটের তলায় সরে যাচ্ছে, যা 'সাবডাকশন' বলে পরিচিত।
সরকার জানিয়েছে, নানকাই ট্রাফে বড় ভূমিকম্প ও পরবর্তী সুনামি হলে প্রায় দুই লাখ ৯৮ হাজার মানুষ মারা যেতে পারে। আর ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে দুই ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।
গত বছরের সতর্কবার্তা এক সপ্তাহ পর প্রত্যাহার করা হলেও এর ফলে আতঙ্কে চালসহ নিত্যপণ্যের অতিরিক্ত কেনাকাটা বেড়ে যায় এবং অনেকেই ছুটির পরিকল্পনা বাতিল করে।
প্রশান্ত মহাসাগরের 'রিং অব ফায়ারে'র পশ্চিম প্রান্তে চারটি বড় টেকটোনিক প্লেটের ওপর অবস্থান করায় জাপান বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর একটি।
পালাবদল/এসএ