
ট্রাম্প-সালমানের নৈশভোজে রোনালদো। ছবি: রয়টার্স
দীর্ঘ সাত বছর পর যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসেছেন সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান। তার এই সফরকে স্মরণীয় করে তুলতে জাঁকজমকপূর্ণ নৈশভোজের আয়োজন করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের ওই ডিনারে ট্রাম্প, মেলানিয়া ও সালমানের সঙ্গে যোগ দিতে দেখা গেছে জনপ্রিয় পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও ধনকুবের ইলন মাস্ককে। বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
নৈশভোজে কালো টাই পরা বাধ্যতামূলক ছিল। মার্কিন মুলুকে আনুষ্ঠানিক নৈশভোজের ক্ষেত্রে এটি একটি প্রচলিত রীতি।
অতিথিদের জন্য তিন কোর্সের ডিনার পরিবেশন করা হয়। প্রথম কোর্স হিসেবে হানিনাট স্কোয়াশ স্যুপ পরিবেশন করা হয়। এই স্যুপের টপিং হিসেবে ছিল ক্র্যানবেরি রেলিশ, মশলাযুক্ত হ্যাজেলনাট ও ব্রাউন-বাটার ক্রেমে ফ্রাখ।
মেইন কোর্স হিসেবে ছিল পেস্তাবাদামে মোড়ানো ভেড়ার মাংস। এর সঙ্গে ছিল মিষ্টি আলুর ভর্তা, ব্রকলি রাবে (মূলা জাতীয় সবজি। নামে ব্রকলি থাকলেও তা ব্রকলি নয়) ও বেদানা-লেবুর সস।
সব শেষে ডেজার্ট হিসেবে ছিল নাশপাতির আদলে বানানো চকলেট ম্যুস (কুভেরচার চকলেট ম্যুস) ও ভ্যানিলা আইসক্রিম।
রোনালদোকে নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
সৌদি ফুটবল ক্লাব আল নাসেরে খেলেন রোনালদো। ট্রাম্প-সালমানের সঙ্গে একই টেবিলেই তাকে বসতে দেখা যায়।
নৈশভোজের আগে ট্রাম্প বলেন, 'আপনারা জানেন কি না, জানি না, আমার ছেলে রোনালদোর অনেক বড় ভক্ত।
তিনি জানান, তার ফুটবল-পাগল ছেলে ব্যারন (১৯) নৈশভোজের আগেই রোনালদোর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন।
'মনে হয় আমার প্রতি তার (ব্যারনের) ভক্তি-শ্রদ্ধা আগের তুলনায় একটু বেড়েছে। কারণ তার সঙ্গে আপনার (রোনালদো) পরিচয় করিয়ে দিয়েছি,' মজা করে বলেন ট্রাম্প।
রোনালদোর পাশাপাশি ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোও ওই নৈশভোজে ছিলেন।
রোনালদো জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপই হবে তার শেষ বিশ্বকাপ। ইতোমধ্যে পর্তুগাল ওই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেছে।
আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো যৌথভাবে খেলার জগতের সবচেয়ে বড় এই উৎসবের আয়োজন করবে।
মাস্ক-ট্রাম্পের বরফ গলছে?
ওই নৈশভোজে আরও যোগ দেন স্পেস এক্স ও টেসলার মালিক ইলন মাস্ক। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন ইলন মাস্ক। পরবর্তীতে দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া মাস্ক সরকারি খরচ কমানোর দপ্তর ডোজ-এর প্রধান হিসেবে পাঁচ মাস কাজ করেন। ওই পদে থাকাকালীন চলতি বছরের মে মাসে সৌদি সফরে ট্রাম্পের অন্যতম সফরসঙ্গী ছিলেন মাস্ক।
গত জুলাইয়ে ট্রাম্পের ‘বিগ, বিউটিফুল বাজেট বিলের’ সমালোচনা করলে দুই ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধুর’ সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দেয়।
মাস্ক দাবি করেন, কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টেইনের তদন্ত ফাইলের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সংশ্লিষ্টতা আছে। এই অভিযোগে রেগে যান ট্রাম্প। তিনি মাস্ককে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। তবে নৈশভোজে মাস্ককে দেখে মনে হয়েছে সেসব দিন পেছনে ফেলে এসেছেন তিনি।
টাক্সিডো পরিহিত মাস্ককে মোমবাতির আলোয় প্রজ্বলিত টেবিলে অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে খোশগল্প করতে দেখা যায়। তবে তিনি ট্রাম্পের টেবিলে বসেননি। তা সত্ত্বেও, বিশ্লেষকরা বলছেন, হোয়াইট হাউসে আবারও মাস্কের উপস্থিতি দুই বন্ধুর সম্পর্ক জোড়া লেগে যাওয়ার ইঙ্গিত।
পালাবদল/এসএ