![]()
সম্প্রতি কানাডার গবেষকরা একটি নতুন তথ্য তুলে ধরেছেন। তাদের গবেষণা ও সমীক্ষা বলছে, এই লকডাউন পরিস্থিতি বা সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন থাকার বিষয়টি মহিলা ও পুরুষের ওপর ভিন্নভাবে প্রভাব ফেলেছে। এক্ষেত্রে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানসিক উদ্বিগ্নতা, অস্থিরতা,অবসাদ সহ একাধিক সমস্যায় পুরুষদের থেকে বেশি ভুগেছেন মহিলারা। অফিসের কাজ, সঙ্গে সন্তান পরিবারকে সময় দেওয়া, ঘরের কাজ সামাল দেওয়া, অন্যের মন জুগিয়ে চলা এছাড়াও করোনা তো অতিরিক্ত চিন্তার কারণ হিসেবে রয়েছে। এত কিছুতে সামাল দিতে পারছে না বহু মহিলা। পাশাপাশি বদলাতে হয়েছে অনেক অভ্যাস। যার কারণে এতকিছুর মাঝে মস্তিস্ককে সজাগ রাখতে মনের কথা ভাবার সময় পাচ্ছে না তাঁরা। নিজেকে সময় দিতে না পেরে একাকীত্বে ভুগছে তাঁরা। হোটসকিস ব্রেইন ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কালগ্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটি দীর্ঘ সমীক্ষা ও গবেষণা চালিয়েছেন। লকডাউনের মাসগুলিতে মহিলা ও পুরুষদের মূলত ঘুম, মানসিক সুস্থতা, মানসিক স্থিতিশীলতা-সহ এই জাতীয় কিছু বিষয়ের ওপর গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এই উপসর্গগুলি নিয়ে বিশদে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। কানাডার ৫৭৩ জন অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে করা এই সমীক্ষায় পুরুষের সংখ্যা ছিল ১১২ ও মহিলার সংখ্যা ছিল ৪৫৯। ২০২০ সালের ২৩ মার্চ থেকে ৭ জুনের মধ্যে এদের গড় বয়সের পরিমাণ ছিল ২৫ বছর ৯ মাস। সমীক্ষায় যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানসিক উদ্বিগ্নতা, অস্থিরতা ও অবসাদের শিকার হচ্ছেন মহিলারা। যত দিন যাচ্ছে ও একাকীত্ব বাড়ছে, তাদের এই উপসর্গ আরো খারাপ ও ভয়ানক হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে এই সংক্রমণকালে আইসোলেশন বা সামাজিক দূরত্বের জাঁতাকলে পড়ে এই ধরনের প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পায়। আরও একটি বিষয়ও সামনে এসেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, মহিলাদের মধ্যে এমপ্যাথি বা সহমর্মিতা বোধের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। এই অধিক মাত্রার এমপ্যাথি কিন্তু মানসিক উদ্বিগ্নতা বা অবসাদের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। তারা অত্যন্ত সংবেদনশীলও। সংসার, প্রিয়জন বা পরিবারের কোনও কঠিন সময়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁদের বেশি চাপ নিতে হয়। প্রত্যেকের প্রতি যত্ন নেওয়া, পরিবারের ছোটো ছোটো বিষয়ের সঙ্গে অতিরিক্তভাবে জড়িয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ভালোবাসা আর স্নেহের জেরে মহিলাদের মানসিক চাপ আর চিন্তাটাও ক্রমে বাড়তে থাকে। এর জেরে মানসিক অবসাদ বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। পালাবদল/এমএ
|