টিকটকের মার্কিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭ কোটিরও বেশি, যাদের বেশিরভাগই তরুণ-তরুণী। ফাইল ছবি
সামাজিক মাধ্যম টিকটকের জন্য 'অত্যন্ত ধনী' ক্রেতা খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানান, দুই সপ্তাহের মধ্যেই তিনি ক্রেতাদের নাম প্রকাশ করতে পারেন।
গতকাল রোববার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
ফক্স নিউজের সানডে মর্নিং ফিচার্স উইথ মারিয়া বার্টিরোমো অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প কথা প্রসঙ্গে বলেন, 'ভালো কথা, আমরা টিকটকের ক্রেতা খুঁজে পেয়েছি।'
“তারা অত্যন্ত ধনী। একদল ধনী ব্যক্তি টিকটক কিনে নেবেন”, যোগ করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প এ বিষয়ে আর কোনো তথ্য দেননি। শুধু জানান, ‘প্রায় দুই সপ্তাহের মাথায়’ তিনি তাদের পরিচয় জানাবেন।
তিনি আরও জানান, টিকটকের বিক্রির প্রক্রিয়া নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে তাকে সম্ভবত ‘চীনের অনুমোদন’ নিতে হবে।
“আমি মনে করি (চীনের) প্রেসিডেন্ট শি (জিনপিং) এতে রাজি হবেন”, যোগ করেন তিনি।
এ মুহূর্তে টিকটকের মালিকানা চীনের ইন্টারনেট খাতের প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের হাতে রয়েছে।
টিকটকের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ এনে এর চীনা মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে পূর্ববর্তী বাইডেন প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছিল যে, যুক্তরাষ্ট্রে প্ল্যাটফর্মটির মালিকানা কোনো নিরপেক্ষ পক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। এই মর্মে কংগ্রেসে একটি আইনও পাস করে তারা। টিকটকের আপিলের পর মার্কিন সুপ্রিম কোর্টও এই আইন বহাল রাখে।
এ বছরের ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প শপথ নেওয়ার একদিন আগে মার্কিন ফেডারেল আইন অনুযায়ী টিকটক নিষিদ্ধ হওয়ার কথা ছিল। তবে রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্প জানান, তিনি টিকটকের বিশেষ ভক্ত। তিনি ওই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেন।
এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে আরও ৯০ দিনের জন্য স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়িয়ে দেন।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মত দেন, জাতীয় নিরাপত্তা নয়, বরং মার্কিন-চীন প্রযুক্তি প্রতিযোগিতার তাপে টিকটকের কপাল পুড়েছে।
প্রেসিডেন্ট পদে আসার আগে টিকটক নিষিদ্ধ করার পক্ষেই ছিলেন ট্রাম্প।
তবে তার উপদেষ্টারা তাকে জানান, ২০০ কোটি বৈশ্বিক ইউজারের ওই প্ল্যাটফর্মে প্রচারণা চালিয়ে তিনি ও তার দল গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের মন জয় করেছেন। এরপর নিজের অবস্থান বদলান ট্রাম্প।
টিকটকের মার্কিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭ কোটিরও বেশি, যাদের বেশিরভাগই তরুণ-তরুণী।
মে মাসে এনবিসি নিউজকে ট্রাম্প বলেন, “টিকটকের জন্য আমার হৃদয়ে একটি বিশেষ জায়গা আছে। যদি তাদের আরও সময় লাগে, আমি সময় বাড়িয়ে দেব।”
১৯ জুনে স্থগিতাদেশের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে আরও ৯০ দিনের জন্য সময়সীমা বাড়িয়ে দেন সাবেক আবাসন ব্যবসায়ী ট্রাম্প।
মে আসেই ট্রাম্প দাবি করেন, একদল সম্ভাব্য ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের কার্যক্রমের মালিকানা নিতে বাইটড্যান্সকে 'বিপুল পরিমাণ অর্থ' দিতে প্রস্তুত আছে।
এর আগের মাসে তিনি দাবি করেন, বেইজিং ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্ক নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বিবাদে জড়ানোর কারণে টিকটক বিক্রির চুক্তিতে সম্মতি দেয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাইটড্যান্স। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার নিরসন হতে হবে এবং 'চীনের আইন মেনে' এই চুক্তির অনুমোদন আসতে হবে।