বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১ ফাল্গুন ১৪৩১
বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
 
সাইটেক
আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চীনের এআই প্ল্যাটফর্ম ডিপসিক, এর মালিকের সম্পত্তি কত টাকার?





পালাবদল ডেস্ক
Wednesday, 29 January, 2025
9:21 PM
 @palabadalnet

বিশ্বের দুই মহাশক্তিধরের মধ্যে ‘কৃত্রিম মেধার যুদ্ধ’ বাধার প্রবল আশঙ্কায় ভুগছে গোটা তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়া। শীঘ্রই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাজারে আমেরিকার একচেটিয়া আধিপত্যে থাবা বসাতে চলেছে চীন। আত্মপ্রকাশের পরেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়ার তাবড় সব টেক জায়ান্টের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছে এই চীনা স্টার্ট আপ সংস্থাটি।

চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি নতুন ‘ওপেন সোর্স রিজ়নিং মডেল’ বা বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি চালু করেছে চীনা সংস্থা ‘ডিপসিক’। এর নাম ‘ডিপসিক-আর১’ রেখেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। একই ধাঁচের আর একটি বহুল ব্যবহৃত এআই প্রযুক্তি হলো ওপেনএআইয়ের ‘চ্যাটজিপিটি’।

ইতিমধ্যেই চীনা স্টার্ট আপ সংস্থাটি এআইয়ের বাজার ধরতে বেশ কিছু লোভনীয় অফার ঘোষণা করেছে। ‘ডিপসিক-আর১’-এর প্রতি ১০ লক্ষ টোকেনের জন্য ২.২ ডলার নেবে তারা। বাংলাদেশি মুদ্রায় খরচ হবে মাত্র ২৭০ টাকা। কম খরচে উন্নত এআই প্রযুক্তি তৈরিতে পথপ্রদর্শক হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ‘ডিপসিক’।

‘ডিপসিক’ আত্মপ্রকাশের পরেই আমেরিকা তথা বিশ্বের প্রথম সারির এআই চিপ প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘এনভিডিয়া’র শেয়ার হু হু করে পড়তে থাকে। এক দিনে মোট ক্ষতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার কোটি ডলারে, ভারতীয় মুদ্রার হিসাবে যা প্রায় ৫০ লক্ষ কোটি টাকা।

বেইজিঙের স্টার্টআপের এই এআই প্ল্যাটফর্ম এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আর তার সঙ্গেই আলোচনায় উঠে এসেছে ডিপসিকের প্রতিষ্ঠাতা লিয়াং ওয়েনফেংয়ের নামও। মাত্র দু’বছর আগে ছোট্ট একটি স্টার্ট আপ হিসাবে পথচলা শুরু করে ডিপসিক। লিয়াং ওয়েনফেং ডিপসিকের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও।

লিয়াঙের সংস্থা ডিপসিকের বয়স মাত্র দুই বছর। তিনি এটি শুরু করেছিলেন ২০২৩ সালে। তবে এর আগে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত অনেক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার আগে ২০১৩ সালে একটি বিনিয়োগ পরিচালনকারী সংস্থা ও ২০১৫ সালে সম্পদ পরিচালনার একটি সংস্থা তৈরি করেন লিয়াং।

‘কোয়ান্টিটিভ হেজ ফান্ড হাই-ফ্লায়ার’ সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা তিনি। সেই সংস্থার ব্যবসায়িক মূল্য দাঁড়ায় ১১ হাজার কোটি টাকায়। এটি মূলত একটি হেজ ফান্ড। এই ফান্ডের ধারণাটি উন্নত দেশগুলিতে বেশ প্রচলিত। বিনিয়োগকারীদের থেকে টাকা নিয়ে তহবিল গড়ে তা থেকে পুনরায় নানা লাভজনক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা হয়। ডিপসিক নির্মাণ খরচের একাংশ এই হেজ ফান্ড থেকেই মিটিয়েছেন লিয়াং ওয়েনফেং।

লিয়াং ওয়েনফেং ডিপসিকের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও। ছবি: সংগৃহীত

লিয়াং ওয়েনফেং ডিপসিকের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও। ছবি: সংগৃহীত

১৯৮০ সালে চীনের গুয়াংডং শহরে জন্ম হয় লিয়াংঙের। ২০২৪ সালের একটি সাক্ষাত্কারে তিনি জানান, তার বাবা ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। চীনের অন্যতম প্রাচীন ঝেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন তিনি।

জো বাইডেনের আমলেই চীনকে অতি উন্নত এনভিডিয়া এআই চিপ রফতানি করা বন্ধ রেখেছিল আমেরিকা। কৃত্রিম মেধা প্রযুক্তিকে বিকশিত করতে এই ধরনের চিপগুলির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দূরদর্শী লিয়াং ২০২১ সালে নিষেধাজ্ঞা জারির আগেই হাজার হাজার অত্যাধুনিক চিপ সংগ্রহ করে রাখেন। সেই সময়ে মনে করা হয়েছিল স্রেফ ঝোঁকের বশে এআই সংক্রান্ত গবেষণার জন্য এত চিপ কিনছেন লিয়াং। কিন্তু তার লক্ষ্য ছিল বহু দূর। পরে সেগুলিকে কাজে লাগিয়ে নতুন কৃত্রিম মেধা তৈরি করলেন লিয়ান।

চীনা স্টার্ট আপের নতুন এআই প্রযুক্তি তৈরির ক্ষেত্রে ওয়েনফেংয়ের টিমের কৃতিত্বও কম নয়। একটি চীনা প্রযুক্তি প্রকাশনাকে ওয়েনফেং বলেছেন যে, তিনি একটি দল তৈরি করার জন্য অভিজ্ঞ ও পেশাদার কর্মী খুঁজতে যাননি। পরিবর্তে, তিনি পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিংহুয়ার মতো শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।

হ্যাংঝো প্রদেশে রয়েছে ডিপসিকের প্রধান কার্যালয়। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে লিয়াং বলেছেন, ‘‘কৃত্রিম মেধা থেকে কত টাকা লাভ হবে, সেটা তখন ভাবিনি। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়াই ছিল আমার উদ্দেশ্য।’’

ডিপসিকের স্রষ্টা লিয়াঙের মোট সম্পদের পরিমাণ কত তা খুব স্পষ্ট নয়। একটি গণমাধ্যমের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী ৪০ বছর বয়সি লিয়াংয়ের মোট সম্পদ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার। তিনি তার সমস্ত কৃতিত্ব স্ত্রী এবং দুই সন্তানের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন।

পালাবদল/এসএ


  সর্বশেষ খবর  
  সবচেয়ে বেশি পঠিত  
  এই বিভাগের আরো খবর  


Copyright © 2024
All rights reserved
সম্পাদক : সরদার ফরিদ আহমদ
নির্বাহী সম্পাদক : জিয়াউর রহমান নাজিম
ফোন : +৮৮-০১৮৫২-০২১৫৩২, ই-মেইল : [email protected]