মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫ ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫
 
রাজনীতি
তরুণদের নিয়ে জরিপ: বিএনপি ৩৮.৭৬, জামায়াত ২১.৪৫ শতাংশ এবং এনসিপি ১৫.৮৪ শতাংশ ভোট পাবে





নিজস্ব প্রতিবেদক
Monday, 7 July, 2025
10:35 PM
 @palabadalnet

ঢাকা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন দল কত শতাংশ ভোট পেতে পারে, সে বিষয়ে তরুণদের ওপর পরিচালিত একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী দুই হাজার তরুণের (নারী ও পুরুষ) মতামত নেওয়া হয়েছে। এসব তরুণের মতে, এবার নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ৩৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট বিএনপি পাবে। এরপরে জামায়াতে ইসলামী ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ১৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ ভোট পাবে। এ ছাড়া বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং নিবন্ধন স্থগিত থাকা আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পায় তাহলে ১৫ দশিমক ৮৪ শতাংশ ভোট পাবে বলে ওই তরুণেরা মনে করেন। তাদের মতে, অন্যান্য ইসলামিক দল ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ ভোট পেতে পারে।

এই জরিপে অংশগ্রহণকারী তরুণদের ৭৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ আগামী নির্বাচনে ভোট দেবেন বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এখনো সিদ্ধান্ত নেননি ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, ভোট দেবেন না বলে জানিয়েছেন ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ। আর ১৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ এখনো ভোটার হননি।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং একশনএইড বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে চলতি বছরের ২০ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। দেশের আটটি বিভাগের প্রতিটি থেকে দুটি জেলা এবং প্রতি জেলার দুটি করে উপজেলা থেকে তরুণদের বাছাই করা হয়। জরিপের এই ফলাফল নিয়ে সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, কেবল ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার জন্য এই জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। এখানে যে মতামত এসেছে, তা শুধু বাছাই করা ওই তরুণদের মতামত। এটাকে দেশের পুরো জনগোষ্ঠীর বা অন্যান্য বয়সের মানুষের মতামত হিসেবে বিবেচনা করা উচিত হবে না। বিশেষ করে রাজনীতির মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলোতে তা কখনোই করা সংগত হবে না।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তরুণদের ভাবনা সম্পর্কিত এ জরিপটি আজ সোমবার প্রকাশ করা হয়। রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন সানেমের গবেষণা সহযোগী সাফা তাসনিম। অনুষ্ঠানে তরুণদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।

জরিপে জুলাই আন্দোলনের পর শিক্ষাগত প্রস্তুতি, কর্মসংস্থান, রাজনৈতিক সচেতনতা এবং ভবিষ্যৎ আশাবাদের বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে। জরিপের তথ্যমতে, তরুণদের ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে রাজনীতির তথ্য পান।

জরিপের একটি প্রশ্ন ছিল বাংলাদেশের প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোর চেয়ে তরুণ নেতৃত্বের দলগুলোর রাজনীতিতে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা করেন কি না। এতে ৪২ শতাংশের বেশি তরুণ আশাবাদী বলে জানান। এ ছাড়া এই তরুণদের দলগুলো তরুণদের চাহিদা ও প্রয়োজনকে উপস্থাপন করতে পারছে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে জরিপে দেখা যায়, নিশ্চিত নন ৪০ দশমিক ২৪ শতাংশ তরুণ এবং ৩০ শতাংশের বেশি তরুণ বলেছেন, এ দলগুলো তরুণদের চাহিদা ও প্রয়োজন কিছুটা উপস্থাপন করতে পারছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ৬০ শতাংশ তরুণ পৃষ্ঠপোষকতা, স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক সহিংসতার অবসান বিষয়ক সংস্কার চান। তরুণদের প্রায় ৫১ দশমিক ৭৭ শতাংশ মনে করেন, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সহায়ক। আর সহায়ক নয় বলে মনে করেন ৪৮.২৩ শতাংশ তরুণ। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর ক্রমবর্ধমান উত্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন ৩৮ দশমিক ৩ শতাংশ তরুণ। একেবারে উদ্বিগ্ন নন বলে জানিয়েছেন ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। আর ৩০ শতাংশ বলেছেন কখনো কখনো উদ্বিগ্ন বা এ বিষয়ে মতামত নেই।

কত সময়ের মধ্যে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসবে-এর উত্তরে ৩৯ শতাংশের বেশি বলেছেন, তারা জানেন না এবং সাড়ে ২২ শতাংশ বলেছেন, কখনোই না। অন্যদিকে ১১ শতাংশের বেশি বলেছেন, পাঁচ বছরের মধ্যে ক্ষমতায় আসবে।

জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, রাজনীতিতে যেসব তরুণ আসেন তারা সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার আশায় নাকি সত্যিকারের পরিবর্তন বা আদর্শ নিয়ে আসেন, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। তিনি আরও বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব সব সময় তরুণেরাই দিয়েছেন, কিন্তু নীতিনির্ধারণে গিয়ে আর এই তরুণেরা থাকেন না।

অনুষ্ঠানে সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, সবকিছু মিলিয়ে যে নতুন বাংলাদেশের কথা চিন্তা করা হচ্ছে সেখানে এই সময়টুকুকে কতটা কাজে লাগানো যাচ্ছে তা দেখতে হবে। পরিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনেরা যদি সুযোগের সদ্ব্যবহার না করে তাহলে বড় কোনো পরিবর্তন হবে না। জুলাই অভ্যুত্থানের আশা বাস্তবায়িত হবে না।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মুহাম্মদ মুনীরুজ্জামান ভূঁঞা এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ কুদ্দুছ আলী সরকার।

পালাবদল/এসএ


  সর্বশেষ খবর  
  সবচেয়ে বেশি পঠিত  
  এই বিভাগের আরো খবর  


Copyright © 2025
All rights reserved
সম্পাদক : সরদার ফরিদ আহমদ
নির্বাহী সম্পাদক : জিয়াউর রহমান নাজিম
ফোন : +৮৮-০১৮৫২-০২১৫৩২, ই-মেইল : palabadal2018@gmail.com