আজ রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বাতেন খাঁর মোড়ে এনসিপির জুলাই পদযাত্রা। ছবি: সংগৃহীত
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে গ্রেনেড মারে, বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এসব আগ্রাসন আর মেনে নেওয়া হবে না।
আজ রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জে এনসিপির পথসভায় নাহিদ ইসলাম এ কথাগুলো বলেন। এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শান্তির মোড় থেকে বেলা দুইটায় শুরু হয় এনসিপির জুলাই পদযাত্রা। পদযাত্রাটি শহরের বাতেন খাঁর মোড়, নিমতলা মোড়, বড়ইন্দারা মোড়, গাবতলা মোড় হয়ে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে পথসভা হয়।
পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, “সীমান্তে অনেক বাহাদুরি হয়েছে দাদাদের। সেই বাহাদুরির দিন শেষ হয়েছে। যদি আর কোনো সীমান্তে পাঁয়তারা করা হয়, যদি সীমান্তে আগ্রাসন চালানো হয়, সীমান্তে আমার ভাইদের ওপর হত্যার চেষ্টা চালানো হয়, আমরা সীমান্তে লংমার্চ ঘোষণা করব। আমাদের সীমান্ত আমরাই রক্ষা করব।’
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ চেয়েছি। আমরা রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার চেয়েছি। গণহত্যাকারীদের বিচার চেয়েছি। আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ চেয়েছি। আমরা জানি, এ দাবি আপনাদের সকলের দাবি। আমরা এসেছি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের বার্তা নিয়ে। যে বার্তা একটি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র কায়েমের জন্য আমাদের স্বপ্ন দেখায়, যে বার্তা একটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখায়, আমরা সেই বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীর উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, “চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমাদের সীমান্ত প্রতিরোধের প্রতীক। চাঁপাইনবাবগঞ্জ মানে সীমান্তে কাস্তে হাতে বসে থাকা সেই কৃষক। আমরা সেই কৃষকের সন্তান। যারা বুক চিতিয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। বুলেট-গুলি বুকে নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, “চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের রাজধানী। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এত ঐতিহ্যবাহী জেলা হওয়া সত্ত্বেও এই আমকে, এটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে, এটাকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরতে, এটাকে রপ্তানি করতে কোনো ধরনের উদ্যোগ আমাদের কোনো সরকারই নেয়নি এখন পর্যন্ত।’
তিনি বলেন, “আমরা জানি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেশমশিল্পের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এটা দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি এ-জাতীয় শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। আমরা চাই বাংলাদেশের যেসব জাতীয় শিল্প রয়েছে, কুটির শিল্প রয়েছে, সেগুলোকে যথাযথভাবে রক্ষা করতে হবে।’
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সভা শুরু হয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সদস্য আসিফ মোস্তফা জামাল। সূচনা বক্তব্য দেন এনসিপির চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান সমন্বয়কারী আলাউল হক। সঞ্চালনা করেন দলের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনুভা জাভিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনীম জারা।