ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল ছবি এএফপি
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। বৃহস্পতিবার এবং অনুষ্ঠান থেকে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, আমেরিকার শুল্কের কারণে ভারতের যা ক্ষতি হচ্ছে, তা রাশিয়া পুষিয়ে দেবে। বেশ কিছু পণ্য ভারত থেকে আরও বেশি করে কেনার কথাও জানিয়েছেন পুতিন। কিন্তু এই আশ্বাসে আদৌ কতটা লাভ হবে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞেরা সন্দিহান। কারণ, ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্য ঘাটতি বিপুল। যত পণ্য রাশিয়া ভারতে বিক্রি করে ভারত থেকে তার সিকি ভাগও কেনে না। ফলে ঘাটতি দিন দিন বাড়ছে।
রাশিয়া থেকে প্রচুর পরিমাণে খনিজ তেল কিনছে নয়াদিল্লি। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া তেলের দাম অনেক কমিয়ে দিয়েছে। তখন থেকেই সস্তায় বেশি করে তেল আমদানি করছে দিল্লি। এতে আপত্তি তুলে আমেরিকা ভারতের উপর শাস্তিমূলক ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। তাতে বড়সড় ধাক্কাও খেয়েছে দিল্লি। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য প্রসঙ্গে ভারত অনড় থেকেছে নিজের অবস্থানে। পুতিন তার প্রশংসা করে বৃহস্পতিবার জানান, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি তারা কিছুটা কমিয়ে আনার চেষ্টা করবেন। বেশি করে কেনা হবে ভারতের কৃষিজাত এবং ঔষধি পণ্য।
২০২৩ সালের পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে ওই বছর ৬.৬ হাজার কোটি ডলারের পণ্য বিক্রি করেছিল রাশিয়া। রফতানির তালিকায় মূলত ছিল খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস। রাশিয়া থেকে বিশেষ ছাড় পাওয়ার পর এই পণ্যগুলি সস্তায় কেনা হয়েছিল। কিন্তু ওই বছর ভারত থেকে রাশিয়ায় গিয়েছে মাত্র ৪১০ কোটি ডলারের পণ্য। অর্থাৎ, ২০২৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ৫.৫ লক্ষ কোটি রুপির।
খনিজ তেল ছাড়া ভারত রাশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি কেনে অস্ত্র। এ ছা়ড়া দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য, যন্ত্রপাতি, ধাতু এবং খনিজ পদার্থের আদানপ্রদান হয়।
২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার আগে ভারতের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক লেনদেন খুব বেশি ছিল না। তখন রাশিয়ার সবচেয়ে বড় খরিদ্দার ছিল চীন। এ ছাড়া নেদারল্যান্ডস এবং আমেরিকার সঙ্গেও অনেক পণ্য কেনাবেচা করত রাশিয়া। তবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আমেরিকার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপের একাধিক দেশ রাশিয়ার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। খরিদ্দারের তালিকায় দ্রুত উঠে আসে ভারত। বর্তমানে রাশিয়ার পণ্যের ক্রেতা তালিকায় চীনের পরেই ভারতের স্থান। ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীন ও রাশিয়ার মধ্যে ওই বছর ১১.৪ লক্ষ কোটি রুপির বাণিজ্য হয়েছে। তার পরেই রয়েছে ভারত, যার পরিমাণ রাশিয়ার মোট বাণিজ্যের ১৬.৮ শতাংশ। সূত্র: আনন্দবাজার ডটকম