আসল কাজটা করে দিয়েছিলেন বোলাররাই, ব্যাটারদের দায়িত্ব ছিল নিরাপদে লক্ষ্যে পৌঁছার। তাতে কোনো ভুল করেননি তারা। বিশেষ করে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংয়ে দেখান ঝলক। বাঁহাতি এই ব্যাটারের ফিফটি পাকিস্তানকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করা পাকিস্তানকে মাত্র ১২৯ রানে আটকে রাখে টাইগ্রেস বোলাররা। মামুলি পুঁজি ১১৩ বল আগে পেরিয়ে জিতেছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
৭৭ বলে ৮ চারে অপরাজিত ৫৪ রানের ইনিংসে দলের জয় নিশ্চিত করেন ঝিলিক। ১৯ বলে ৬ রানে ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন সোবহানা মুশতারি। এর আগে মারুফা আক্তার, নাহিদা আক্তাররা প্রতিপক্ষকে অল্প রানে গুটিয়ে তৈরি করেন জেতার ভিত।
১৩০ রানের লক্ষ্যে চতুর্থ ওভারেই ফারজানা হক পিংকিকে হারায় বাংলাদেশ। তিনে নেমে থিতু হওয়ার চেষ্টায় ছিলেন শারমিন আক্তার সুপ্তা, তিনি ফেরেন ৩০ বলে ১০ রান করে। ৩৫ রানে ২ উইকেট হারানো দল এরপর পায় শক্ত জুটি। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির সঙ্গে ৬২ রানের জুটি গড়েন ঝিলিক।
৪৪ বলে ২৩ করে জ্যোতি ফিরলেও সোবহানা মুশতারিকে নিয়ে কাজ সারেন ঝিলিক। এই জুটিতে অবশ্য মুশতারিই ছিলেন অগ্রণী, ৫ বাউন্ডারিতে দ্রুত খেলা শেষ করে দেন তিনি।
ঝিলিক শুরু থেকে ছিলেন আস্থার নাম। মুভমেন্ট থাকায় থিতু হতে সময় নেন, থিতু হয়েই মারেন দারুণ সব শট। ৮ বাউন্ডারিতে স্পর্শ করেন নিজের প্রথম ওয়ানডে ফিফটি। ফিফটির পর একটু সতর্ক হয়ে পড়েন, আরেক পাশে তখন দ্রুত রান আনছেন মুশতারি, ঝিলিকের তেমন কিছু করতে হয়নি।
টস হেরে বল করতে নেমে লাভই হয়েছে বাংলাদেশের। পিচের আর্লি সিম মুভমেন্ট কাজে লাগিয়ে মারুফা আক্তার হয়ে উঠেন ভয়ঙ্কর। গত বছর কয়েক ধরেই দলের সেরা পেসার মারুফা, বেশিরভাগ ম্যাচে পেস আক্রমণে একা ভার বহন করেন তিনি। ইনস্যুইং করানো সামর্থ্য মারুফাকে করে আলাদা। এদিন শুরু থেকেই ভেতরে ঢোকানো বলে ব্যাটারদের ভোগান্তির কারণ হন তিনি। ওমানিয়া সোহাইল ও সিদ্রা আমিনকে মোহনীয় দুই ডেলিভারিতে বোল্ড করে করেন প্রথম ওভারেই। তার বেধে দেওয়া এই সুর ধরে মাঝের ওভারে নাহিদা আক্তার, রাবেয়া খান, নিশিতা নিশি, ফাহিমা খাতুনরা হয়ে উঠেন প্রতিপক্ষের জন্য বিপদজনক। এই স্পিনাদের বলে হাবুডুবু খেয়ে পাকিস্তানের ইনিংস খুঁড়াতে থাকে, দেড়শোর অনেক নিচেই তারা আটকে যায়। শুরুর ওই স্পেলের জন্যই ম্যাচ সেরা হন মারুফা।