ঢাকা: ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহহি রাজিউন)। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে তিনি মারা যান। সেখানে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
আহমদ রফিকের স্বাস্থ্যের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসমাইল সাদী। তিনি চিকিৎসকের বরাত দিয়ে আহমদ রফিকের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন। ইসমাইল সাদী বলেন, “আহমদ রফিক আজ রাত ১০টা ১২ মিনিটে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।”
আহমদ রফিককে গত ১১ সেপ্টেম্বর সকালে ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় গত রোববার তাকে বারডেমে ভর্তি করা হয়।
গত মঙ্গলবার রাতে আহমদ রফিকের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ইসমাইল সাদী জানিয়েছিলেন, তার কিডনির সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি ‘মাইল্ড স্ট্রোক’ হয়েছে। তিনি এখন অচেতন অবস্থায় আছেন, তাকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে।
গবেষক ও বহুমাত্রিক লেখক, রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিক পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। জীবনভর তিনি দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। রবীন্দ্র চর্চা কেন্দ্র ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি।
তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশ পদক পেয়েছেন। এছাড়া, কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে 'রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য' উপাধিতে দিয়েছে।
আহমদ রফিকের জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তার স্ত্রী মারা গেছেন ২০০৬ সালে। তিনি নিঃসন্তান। কবিতা, প্রবন্ধ, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, গবেষণা মিলিয়ে তার লেখা ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক।
সর্বশেষ ২০২৩ সালের একুশের বইমেলায় দুটি বই সময় প্রকাশন থেকে ‘ভারত-পাকিস্তান বাংলাদেশ কথা’, এই সময় পাবলিকেশনস থেকে প্রবন্ধগ্রন্থ ‘শিল্প-সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য’ প্রকাশিত হয়।
আহমদ রফিকের দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসে ২০১৯ সালে। সে বছর চোখে অস্ত্রোপচার করা হলেও অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। ২০২৩ সালে তিনি প্রায় দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন।