পাকিস্তানের করাচিতে জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিস্ফোরণে দুই চীনা নাগরিক নিহত হয়েছেন। চীনা দূতাবাস বলেছে, সিন্ধু প্রদেশে একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করা চীনা প্রকৌশলীদের গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়েছে।
দূতাবাসের উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসি জানায়, পাকিস্তানের স্থানীয় সময় গতরাত ১১টার দিকে এই বিস্ফোরণে সর্বমোট নিহতের সংখ্যা এখনো স্পষ্ট নয়। বিস্ফোরণে 'অনেক পাকিস্তানি কর্মী নিহত ও আহত' হয়েছে বলেও তারা জানিয়েছে।
পাকিস্তানের ডনের খবরে জানানো হয়, একটি গাড়ির সঙ্গে তেলের ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষের পর বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এটি আইইডি বিস্ফোরণ নাকি দুর্ঘটনা সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত নয় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (পূর্ব) ক্যাপ্টেন (অব.) আজফার মহেসার জানান, বিস্ফোরণে সাতটি গাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট ছাড়া বিস্ফোরণের কারণ জানা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি সন্ত্রাসীদের কাজ, নাকি দুর্ঘটনা সে সম্পর্কে এখনি নির্দিষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে বিবিসি বলছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সংগঠনটি বিদ্যুৎ প্রকল্পের চীনা নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
এক বিবৃতিতে বিএলএ বলেছে, করাচি বিমানবন্দর থেকে আসা চীনা প্রকৌশলী এবং বিনিয়োগকারীদের একটি উচ্চ পর্যায়ের দল তাদের লক্ষ্যবস্তু ছিল।
চীনা দূতাবাস জানায় ওই প্রকৌশলীরা চীনের অর্থায়নে নির্মিত পোর্ট কাসিম পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে জড়িত। প্রতিষ্ঠানটি করাচির কাছে পোর্ট কাসিমে দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে। বিদ্যুৎ প্রকল্পটি চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের একটি অংশ।
ইকোনমিক করিডোর তৈরিতে প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ বেলুচিস্তান প্রদেশে অবকাঠামো ও বিদ্যুৎ খাতে বেশ কিছু প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
বিএলএ অন্যান্য জাতিগত বেলুচ গোষ্ঠীর সঙ্গে একটি পৃথক রাষ্ট্রের জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করেছে। সংগঠনটি নিয়মিতভাবে এই অঞ্চলে চীনা নাগরিকদের টার্গেট করেছে। তাদের অভিযোগ, জাতিগত বেলুচরা বিদেশি বিনিয়োগের সুফল থেকে বঞ্চিত।