বৃহস্পতিবার ২ অক্টোবর ২০২৫ ১৭ আশ্বিন ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ২ অক্টোবর ২০২৫
 
দক্ষিণ এশিয়া
সকালে পদত্যাগ করে বিকেলে শপথ নিলেন বিহারের ‘ডিগবাজি খেলোয়াড়’ মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ





পালাবদল ডেস্ক
Monday, 29 January, 2024
1:49 AM
Update: 29.01.2024
1:51:36 AM
 @palabadalnet

রোববার শপথগ্রহণের পর রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকারের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার এবং তার দুই উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী ও বিজয় কুমার সিনহা। ছবি: পিটিআই

রোববার শপথগ্রহণের পর রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকারের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার এবং তার দুই উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী ও বিজয় কুমার সিনহা। ছবি: পিটিআই

রোববার সকালে মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বিকেলে ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন জেডিইউ নেতা নীতিশ কুমার। এই নিয়ে মোট ৯ বার তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেন।

নীতিশকে রোববার বিকেল পাঁচটা নাগাদ রাজভবনে শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকর। তার সঙ্গেই মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শপথ নেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও বিধান পরিষদের (রাজ্যের উচ্চকক্ষ) সদস্য সম্রাট চৌধুরী ও বিজয় সিনহা। তারা দুজনই হবেন উপমুখ্যমন্ত্রী। আরও ছয় নেতা মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপির প্রেম কুমার।

নীতিশের দল থেকে তিনজন পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। বিজয় কুমার চৌধুরী, বীজেন্দ্র প্রসাদ যাদব ও শ্রাবণ কুমার। শরিক দল হিন্দুস্তান আওয়ামী মোর্চার (ধর্মনিরপেক্ষ) সভাপতি সন্তোষ কুমার ও সমর্থনকারী একমাত্র স্বতন্ত্র বিধায়ক সুমিত কুমার সিংও পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা। এত দিন ধরে নীতিশ কুমার মন্ত্রিসভার উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। আজ পালাবদলের পর তিনি বলেন,“আমার কথা মিলিয়ে নেবেন। বিহারে জেডিইউ দলটা একেবারে শেষ হয়ে যাবে। রাজ্যের মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। তারাই উপযুক্ত জবাব দেবেন। খেলা এখনো শেষ হয়নি।” জেডিইউকে সঙ্গে নেওয়ার জন্য তেজস্বী বিজেপিকে অভিনন্দন জানান।

নীদিশের ‘রাজনৈতিক ডিগবাজি’ নিয়ে বিহারের সদ্য প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, “খেলা সবে শুরু হলো। খেলা এখনও বাকি আছে।”

তবে নীতিশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তিগত আক্রমণ শানাবেন না জানিয়েও তেজস্বী বলেন, “মনে হয় আমরা এক জন ক্লান্ত মুখ্যমন্ত্রীকে কাজ করতে দিয়েছিলাম। আমি বিজেপিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, নীতীশ কুমারের দলকে তাদের সঙ্গে নেওয়ার জন্য।” 

তার পরই রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে লালু-পুত্রকে বলতে শোনা যায়, “নীতিশ কুমার নিজেও জানেন না, উনি কী বলছেন। আমার কথা মিলিয়ে নেবেন, আমি লিখে দিতে পারি যে, ২০২৪ সালে জেডিইউ শেষ হয়ে যাবে।” মনে করা হচ্ছে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নীতিশের দল শোচনীয় ফলাফল করবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তেজস্বী। বিহারের জনগণ তার দল আরজেডির পাশে আছে বলেও দাবি করেন তেজস্বী।

তেজস্বীর কথায় কিছুটা সারবত্তা যে নেই, তা নয়। ২০১০ সালে বিহার বিধানসভায় জেডিইউয়ের মোট বিধায়ক ছিলেন ১১৫ জন। ২০১৫ সালে তা কমে হয়েছিল ৭১। ২০২০ সালে জেডিইউয়ের মোট বিধায়ক ছিলেন ৪৩ জন। জেডিইউ যত সংখ্যা হারাচ্ছে, তত সংখ্যা বাড়ছে বিজেপির।

নতুন সরকার গঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নীতিশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তিনি বলেন, রাজ্যের উন্নয়ন ও মানুষের আশা–আকাঙ্ক্ষা মেটাতে নতুন এনডিএ সরকার চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখবে না। মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার এবং দুই উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী ও বিজয় সিনহাকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমার আশা, এই নতুন সরকার একাগ্রতার সঙ্গে রাজ্যবাসীর সেবা করে যাবে।’

আগামী বছর রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন। তত দিন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবেই নীতিশ মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন বলে বিজেপি তাকে আশ্বাস দিয়েছে। তার আগে রয়েছে লোকসভার ভোট। ২০১৯ সালে নীতিশকে পাশে নিয়েই এনডিএ রাজ্যের ৪০ টির মধ্যে ৩৯টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। এবারও নীতিশকে সেই লক্ষ্যেই কাছে টেনেছে তারা।

তবে বারবার এভাবে শিবির বদলের জন্য নীতিশের বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে তার উদ্দেশে বলেছেন, ভারতের রাজনীতিতে কিছু ‘আয়া রাম গয়া রাম’ এখনো টিকে আছে। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেছেন, রংবদলের ক্ষেত্রে নীতিশ কুমার গিরগিটিকেও লজ্জায় ফেলে দিয়েছেন।

পালাবদল/এমএম


  সর্বশেষ খবর  
  সবচেয়ে বেশি পঠিত  
  এই বিভাগের আরো খবর  


Copyright © 2025
All rights reserved
সম্পাদক : সরদার ফরিদ আহমদ
নির্বাহী সম্পাদক : জিয়াউর রহমান নাজিম
ফোন : +৮৮-০১৮৫২-০২১৫৩২, ই-মেইল : palabadal2018@gmail.com