
নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলনেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো ও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি
নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলনেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে একাধিক কাজে সাহায্য করেছেন, দাবি করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে মারিয়ার। দাবি, পুরস্কার জেতার পরেই মারিয়া তাকে ফোন করেছিলেন। ফোনে জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সম্মানে তিনি এই পুরস্কার গ্রহণ করছেন। এমনকি, এই পুরস্কারের যোগ্য দাবিদার ছিলেন ট্রাম্প, স্বীকার করেছেন মারিয়া। শুক্রবার নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ীর নাম ঘোষণা হওয়ার পর হোয়াইট হাউসের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মারিয়ার সঙ্গে এই ফোনালাপ ফাঁস করেছেন ট্রাম্প।
নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য এ বছর মোট ৩৩৮টি মনোনয়ন জমা পড়েছিল। সেই তালিকায় ছিলেন ট্রাম্পও। একাধিক বার তিনি দাবি করেছেন, এই পুরস্কার তার প্রাপ্য। কারণ, তিনি দ্বিতীয় বার আমেরিকায় ক্ষমতায় এসে গত কয়েক মাসে পর পর সাতটি যুদ্ধ থামিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পকে পুরস্কার দেওয়া হয়নি। নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলনেত্রী। নোবেল কমিটি জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলার বিরোধীদল এক কালে দ্বিধাবিভক্ত ছিল। তাদের একত্রিত করার কৃতিত্ব মারিয়ার। তাই তাকে শান্তি পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এই ঘোষণার পর ট্রাম্প বলেন, “নোবেল শান্তি পুরস্কার যে পেয়েছে, সে আমাকে ফোন করেছিল। বলেছে, আমি এটা আপনার সম্মানেই গ্রহণ করছি। কারণ, আপনি এর যোগ্য দাবিদার ছিলেন।”
ট্রাম্প দাবি করেছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই মারিয়াকে তিনি নানা কাজে সাহায্য করে আসছেন। মারিয়া পুরস্কার পাওয়ায় তিনি খুশি। তার কথায়, “আমি তো বলিনি, আমাকে পুরস্কার দাও! ভেবেছিলাম, ও (মারিয়া) পেতেও পারে। আমি অনেক দিন ধরে ওকে সাহায্য করে আসছি। ভেনেজুয়েলার বিপর্যয়ের সময় ওদের অনেক সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। আমি খুশি। কারণ, আমি লক্ষ লক্ষ জীবন বাঁচিয়েছি।”
নোবেল শান্তি পুরস্কার ট্রাম্পকে উৎসর্গ করেছেন মারিয়া। জয়ী হিসাবে তার নাম ঘোষণা হওয়ার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, “আমরা আজ জয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি। আর আজ আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে, আমেরিকার জনগণকে এবং দক্ষিণ আমেরিকার মানুষকে। সারা বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলিকে আমাদের বন্ধু হিসাবে দরকার। ভেনেজুয়েলার জনগণ এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আমি এই পুরস্কার উৎসর্গ করছি।” তবে ট্রাম্পকে ফোন করার কথা কিছু বলেননি মারিয়া।
ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, সাতটি যুদ্ধ থামানোর জন্য তার সাতটি নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া উচিত। এমনকি, শুক্রবার জয়ীর নাম ঘোষণার আগে তিনি দাবি করেন, পূর্বতন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কিছু না করে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। তাই সাত যুদ্ধ থামানোর পর তারও তা পাওয়া উচিত। কোন সাত যুদ্ধ? কোথায় কোথায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন? তার তালিকাও তুলে ধরেন ট্রাম্প। সেই তালিকায় রয়েছে আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, কোসোভো-সার্বিয়া, ইসরায়েল-ইরান, মিশর-ইথিওপিয়া, রোয়ান্ডা-কঙ্গোর মতো সংঘাত। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত মে মাসে যে সংঘর্ষ বেধেছিল, তা-ও ট্রাম্প থামিয়েছেন বলে দাবি করেন।
পালাবদল/এসএ