
মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান। ছবি: লাইভ থেকে নেওয়া
ঢাকা: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেন (আইসিটি) পরোয়ানাভুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জন সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং একজন মিসিং আছে।
আজ শনিবার ঢাকা সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ৮ অক্টোবর আইসিটিতে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) প্রথমে দুটি, পরে তৃতীয় চার্জশিট জমা পড়লো। আমরা জানতে পেরেছি টিভির মাধ্যমে যে, এ রকম চার্জশিট প্রথমে এক-দুই, পরে শুনলাম যে, তিন নম্বর চার্জশিটও জমা হয়েছে। একটা চার্জ হয়েছিল গুম সংক্রান্তই, এটা হলো যে যারা ডিজিএফআইতে কর্মরত ছিল, তাদের একটি বড় অংশ এখানে জড়িত ছিল বিধায় বা জড়িত আছে এ রকম একটা অভিযোগ; আরেকটা হচ্ছে র্যাবের টিএফআই নিয়ে এবং আরেকটা ছিল সেটা ৪-৫ আগস্টের রামপুরার ঘটনারর ওপর ভিত্তি করে।
“অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়ে যায়। ওয়ারেন্ট ইস্যু করে ট্রাইব্যুনাল, এটা যায় পুলিশের কাছে, আইজিপির কাছে। একটা ডেট দেওয়া আছে ২২ তারিখের ভেতরে তাকে কার্য সমাপ্ত করতে বলেছেন। আমাদের বিভিন্ন অ্যাপয়েন্টমেন্টে যারা আছে, তাদের কাছে একটা করে অনুলিপি—আমরা এটা সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখেছি এবং টিভির স্ক্রলে কেউ কেউ এটা দিতে পেরেছেন, কেউ কেউ দিতে পারে নাই। কিন্তু আমরা সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখেছি, এ রকম চার্জশিটের অনুলিপির ভেতরে কারও কারও আছে।।”
মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট এখন পর্যন্ত আমাদের হস্তগত হয় নাই। এটা আইনি বিষয়, এটা অন্য কোনো চিঠি বা অন্য কোনো কিছু না যে, ইলেকট্রিসিটি বিল আসলো, সে ইলেকট্রিসিটি বিল দিলো না কেন! এটা কিন্তু আইনি, এটা আসার কথা, তার একটা প্রেসক্রাইবড রুট আছে। সেটা পুলিশের মাধ্যমে আসবে, ইন্ডিভিজুয়ালের কাছে পৌঁছাবে, ইন্ডিভিজুয়াল এটা রিসিভ করবেন, ওটা সাইন করবেন, ডকুমেন্ট ফেরত যাবে, কোর্ট অ্যাকনলেজ করবেন যে যার কাছে ইস্যু হয়েছিল সেটা রিসিভ করেছে। আমরা ওয়ারেন্টটা এখনো আমাদের হস্তগত হয়নি।
“বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সংবিধান স্বীকৃত বাংলাদেশের সব আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই ৮ তারিখেই আমরা যেটা করেছি, যে অফিসারদের নাম এসেছে, সর্বসাকুল্যে প্রায় ২৫ জন, এর ভেতরে বরখাস্ত বা অবসরে যারা আছেন নয়জন, এলপিআরে (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটি) আছেন একজন, আর কর্মরত অফিসারের সংখ্যা ১৫। যারা অবসরে চলে গেছেন, সেনা আইন তাদের ওপরে ওইভাবে খাটে না। এলপিআর এবং চাকরিরত ১৬ জনকে ৮ তারিখেই সেনা হেফাজতে আসার জন্য আমরা অর্ডার (অ্যাটাচমেন্ট অর্ডার) দিয়েছি।।”
তিনি বলেন, খুব স্বাভাবিকভাবে যেকোনো সরকারি বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে কাউকে এক জায়গা থেকে যদি আরেক জায়গায় বদলিও করেন, তাকে একটা সময় দেওয়া হয় জার্নি করার জন্য। যেটাকে বলা হয় জার্নি টাইম। যোগদান করার জন্য একটা সময় দেওয়া হয়, যেটা হলো জয়েনিং টাইম। এটা কিন্তু আমাদের প্রচলিত। এটা ঘটেছে বিকেল অথবা সন্ধ্যার কাছাকাছি সময়, ৮ তারিখে বলা হয়েছে ৯ তারিখের ভেতরে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে সেনা হেফাজতে তাদেরকে অ্যাটাচ করার জন্য।
“১৫ জনের মধ্যে একজন শুধু মিসিং। বাকি সবাই হেফাজতে চলে এসেছেন। ১৪ জনই সেনা হেফাজতে চলে এসেছেন। এলপিআরে একজন আছে, সেও এসেছে।।”
মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, শুধু একজন, তাকে বলা হয়েছিল, মেসেজ দেওয়া হয়েছিল, তিনি ঢাকা ক্যান্টনমেন্টেই থাকতেন কিন্তু ৯ তারিখে শেষ পর্যন্ত জয়েন করেননি বিধায় ১০ তারিখে আমরা আবার তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি এবং যোগাযোগ স্থাপন করি। জানতে পারি, উনি তার আগের দিন, মানে ৯ তারিখ সকালে উনি বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। একটি আইনি বিষয়ে আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। অদ্যাবধি উনি বাসায় ফেরত আসেননি, আর তার সঙ্গে মোবাইলেও যোগাযোগ করতে পারছেন না। মেজর জেনারেল কবির, উনার স্ত্রীও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন। এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে আর যোগাযোগ হচ্ছে না।
পালাবদল/এসএ