ঢাকা: দীর্ঘসময় পর টাকার বিপরীতে ডলারের দাম কিছুটা কমছে। গত কয়েকদিনে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়ায় ডলারের বিনিময় হার ২ টাকা ২০ পয়সা কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আজ সোমবার আন্তঃব্যাংকিং ডলারের বিনিময় মূল্য দাঁড়িয়েছে ১২০ টাকা ১০ পয়সা, যা গত ৯ জুলাই ছিল ১২২ টাকা ৩০ পয়সা।
তবে ডলারের ক্রয়মূল্য ছিল ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা।
২০২২ সালে কোভিডের প্রভাবে বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে টাকার অবমূল্যায়ন শুরু হয়। এরপর থেকে টাকার মান এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে।
তবে সাম্প্রতিক টাকার মান বৃদ্ধির পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে আছে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়া, হুন্ডি ও মানি লন্ডারিং কমা ও ঋণদাতাদের অর্থ ছাড়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮১ শতাংশ বা ৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বেশি।
আইএমএফের ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির শর্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক মে মাসে একটি উদার মুদ্রাবিনিময় হার ব্যবস্থা চালু করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, প্রথমদিকে ব্যাংকাররা আশঙ্কা করেছিলেন যে, এতে টাকার মান আরও কমে যেতে পারে। কিন্তু, বাস্তবে দেখা গেছে মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল হয়েছে। এই স্থিতিশীলতা বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতেও সাহায্য করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত ১০ জুলাই পর্যন্ত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ২১ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার।
ডলারের দাম দ্রুত কমতে থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৩ জুলাই প্রথমবারের মতো বাজার থেকে ডলার কেনে। নতুন ব্যবস্থার অধীনে ১৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ১৭১ মিলিয়ন ডলার কেনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, “ডলারের দরপতনও মুদ্রাবাজারের জন্য ইতিবাচক নয়। তাই বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমাদের হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।”
“ডলারের দাম অতিরিক্ত দুর্বল হলে রপ্তানিকারক ও রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাই আমরা ১৭১ মিলিয়ন ডলার কিনেছি, যার সর্বনিম্ন মূল্য ছিল ১২১ টাকা ৫০ পয়সা,” বলেন তিনি।