
আজ রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে পঞ্চগড় স্বাস্থ্যসেবা তহবিলের জন্য ১০ লাখ টাকা অনুদানের চেক তুলে দেন জামায়াতের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত
পঞ্চগড় : পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালকে ১০০ থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করতে নতুন ভবন নির্মাণ করা হলেও জনবল, শয্যা ও চিকিৎসার সরঞ্জামে বরাদ্দ না পাওয়ায় চালু করা যাচ্ছিল না। অবশেষে হাসপাতালটি চালু করতে ‘পঞ্চগড় স্বাস্থ্য সহায়তা তহবিল’ নামে একটি তহবিল গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। খোলা হয়েছে ব্যাংক হিসাব। সেই তহবিলে ১০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
আজ রোববার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলীর হাতে ১০ লাখ টাকা অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। এ সময় পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন মিজানুর রহমান, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ইকবাল হোসাইন, সেক্রেটারি দেলওয়ার হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে পঞ্চগড়কে জেলা ঘোষণার পর পঞ্চগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে পঞ্চগড় সদর হাসপাতাল করা হয়। ২০০৫ সালে হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়ে আধুনিক সদর হাসপাতালে পরিণত হয়। এর পর থেকেই চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল–সংকট আজও ঘোচেনি। হাসপাতালটি ১০০ শয্যার হলেও প্রতিদিন গড়ে অন্তত ২৫০ জনের বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। শয্যাসংকট ঘোচানো ও চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়নে হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় রূপান্তরের জন্য ৯ তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০২৪ সালের জুনে আটতলা পর্যন্ত কাজ করে ভবনটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে গণপূর্ত বিভাগ। নবম তলায় আইসিইউ ও আইসোলেশন ইউনিটের কাজ এবং লিফট সংস্কারের কাজ এখনো চলমান।
এদিকে হাসপাতালের পুরোনো ভবনে শয্যা সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের মেঝে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। জেলার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে গত ১৮ অক্টোবর হাসপাতালের নতুন ভবন চালুর বিষয়ে একটি সভা করেন জেলা প্রশাসক। সেখানে জেলা স্বাস্থ্য সহায়তা তহবিল গঠন করে তা পরিচালনার জন্য ১৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। খোলা হয় ব্যাংক হিসাবও। এর পর থেকেই জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিত্তবান ব্যক্তিরা ওই তহবিলে অনুদান জমা দেওয়া শুরু করেন। চলতি নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে সীমিত পরিসরে হাসপাতালের নতুন ভবনটি চালু করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ।
পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন মিজানুর রহমান বলেন, প্রশাসনের মাধ্যমে সব দলের নেতা ও সচেতন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠন করা স্বাস্থ্য তহবিল প্রথম দিকে হাসপাতালের নতুন ভবন চালু করার উদ্দেশ্যে গঠন করা হলেও এটি স্থায়ীভাবে পঞ্চগড়ের সাধারণ মানুষের জন্য বিভিন্নভাবে কাজে আসবে। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ বিত্তবানদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আশা করছেন, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে সীমিত পরিসরে নতুন ভবনটি চালু করা সম্ভব হবে।
পালাবদল/এসএ