বগুড়া : বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে আসামির পরিবারের লোকজনের হামলায় পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি অভিযান চালিয়ে হামলার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে বগুড়ার শেরপুরের শাহবন্দেগী ইউনিয়নের শেরুয়া দহপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
থানা–পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর শেরপুর থানায় দায়ের করা বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের একটি মামলায় উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম এজাহারভুক্ত ১০৭ নম্বর আসামি ছিলেন। থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতারে সোমবার দুপুরে সিরাজুল ইসলামের বাড়ি ঘেরাও করে। এরপর বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে গেলে ওই বাড়ির নারী–পুরুষসহ কিছু লোক পুলিশের ওপর হামলা করে। এই হামলায় আহত হন শেরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সরাফত জামানসহ পুলিশ কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম, মো. নূরনবী ও আইনুল হক। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় যাদের আটক করা হয়েছে, তারা হলেন সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী কোহিনুর বেগম (৪৮), তার ছেলে নজরুল ইসলাম ওরফে লিটন (৩৫) ও পুত্রবধূ (নজরুল ইসলামের স্ত্রী) কামরুন নাহার ওরফে রিমা (২৫)। তাদের সবাইকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
ঘটনার পর সরেজমিনে গেলে এজাহারভুক্ত আসামি সিরাজুল ইসলামের ভাতিজা মো. রাজু বলেন, তার চাচাকে ধরতে এসে পুলিশ বাড়িতে চাচাকে পায়নি। চাচার বাড়ির লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করেছেন কি না, তা তিনি জানেন না বলে দাবি করেন। চাচি, চাচাতো ভাই ও তার স্ত্রীকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন রাজু।
স্থানীয় দুজন বাসিন্দা বলেন, সিরাজুল ইসলামের বাড়ি চারদিকে উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। বাড়ির ভেতরে কী হয়েছে তা তারা জানেন না। পুলিশ সোমবার দুপুরে ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। পরে থানা থেকে আরও অতিরিক্ত পুলিশ এসেছিল।
হামলায় আহত এসআই সরাফাত জামান বলেন, গোপন সূত্রে তাদের কাছে তথ্য ছিল, আসামি সিরাজুল ইসলাম তার বাড়িতে লুকিয়ে আছেন। এই সংবাদের পর ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। পুলিশ বাড়ির চারপাশে ঘেরাও করে বাড়ির ভেতরে প্রবেশের সময় আটক তিনজনসহ অন্যরা পুলিশের ওপরে হামলা চালায়। এতে তিনিসহ অভিযানের অংশ নেওয়া তিনজন কনস্টেবল আহত হন। এই হামলার ঘটনায় থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে এবং ওই তিনজনকে আটক করে। পাঁচ-ছয় মাস আগেও সিরাজুলকে গ্রেফতার করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা বাধার মুখে পড়েছিলেন।
বিষয়টি সোমবার আজ রাত পৌনে আটটার দিকে শেরপুর থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশের ওপর এই হামলার ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অভিযানকালে আটক ওই তিনজন এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হবেন। তিনি আরও বলেন, ১০ থেকে ১২ জন পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রত্যেকেই এই মামলার আসামি হবেন।