ঢাকা: সাংবাদিকদের মধ্যে যারা সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, উস্কানিদাতা ছিল এবং গণহত্যার সমর্থন করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনে আহতদের অনুদানের চেক হস্তান্তরের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, “শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আন্দোলনে আহত-নিহতদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে।”
আহতদের বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, “যারা সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, উস্কানিদাতা ছিল এবং গণহত্যার সমর্থন করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। এর বাইরে অন্যায়ভাবে কারও বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হলে, তা খতিয়ে দেখতে তথ্য মন্ত্রণালয়ে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে।”
“যদি কোনো সাংবাদিক বা তার পরিবার মনে করে যে মামলার মাধ্যমে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে, তাহলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা তাদের সহযোগিতা করব,” বলেন তিনি।
আহত-নিহতদের মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে একটি লিগ্যাল টিম কাজ করছে। আমরা স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে এই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করব। গণঅভ্যুত্থানে যারা শহিদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, তারা দেশের বীর সন্তান। আন্দোলনে বিভিন্ন দলের যেসব নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন, তাদের সেই আত্মত্যাগকে আমরা স্বীকৃতি দেই।”
“আমরা অনুরোধ করব শহিদ ও আহতদের যেন আমরা কোনো দল বা ব্যানার দিয়ে ভাগ করে না ফেলি। আমরা যেন তাদের নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না করি,” যোগ করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “ঢাকা মেডিকেলে আসার আগে অনেকে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের সেই খরচ আমরা দিয়ে দেবো।”
আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় মামলা হচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “দ্রুতই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হবে যেন আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোথাও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের হত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যরা যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।”
এ পর্যন্ত জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে আহতদের অনুদানের টাকার হিসাব সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।
তিনি জানান, আজ মোট ১২২ জনকে জনপ্রতি এক লাখ টাকা করে এক কোটি ২২ লাখ ৬৪ হাজার ৪০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন ৩০ জনের মধ্যে ২৩ জনকে জনপ্রতি ১ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। বাকি ৭ জনের নাম সম্পূর্ণ না থাকায় তাদের বিকাশের মাধ্যমে আজই টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ৩৩ জনের বিকাশে এবং জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন ইনস্টিটিউটে (পঙ্গু হাসপাতাল) ৫৯ জনের বিকাশে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
এ পর্যন্ত জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে ১৭৬ জন আহতকে মোট এক কোটি ৭১ লাখ ৪২ হাজার ৫০ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।