
বন্ধ হচ্ছে এমটিভির মিউজিক চ্যানেল। ছবি: সংগৃহীত
গতকাল থেকে সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সবার প্রিয় এমটিভি।
তবে প্রকৃত সত্য হলো, পুরোপুরি নয়, এমটিভির সঙ্গীতভিত্তিক চ্যানেলগুলো বন্ধ হচ্ছে।
এমটিভির মূল প্রতিষ্ঠান প্যারামাউন্ট গ্লোবাল ঘোষণা দিয়েছে, এমটিভির গানের চ্যানেলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর এমটিভি এইটিস, এমটিভি নাইন্টিস, এমটিভি মিউজিক, ক্লাব এমটিভি ও এমটিভি লাইভের সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে।
চার দশক ধরে সঙ্গীত জগতে দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর পর এই দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত নিয়েছে এমটিভি। ৮০ ও ৯০ এর দশকে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশিরা অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করেছেন। অনেকেই পুরনো স্মৃতি নিয়ে লিখেছেন।
এমটিভি এইচডি নামের মূল চ্যানেলের সম্প্রচার অব্যাহত থাকবে। তবে সেখানে থাকবে না কোনো গানের ছোঁয়া। রিয়েলিটি শো ঘিরেই চলবে এর কার্যক্রম।
এক কালে শিল্পীদের কাছে এমটিভির কদর ভিন্ন মাত্রায় ছিল। নতুন শিল্পীদের স্বপ্ন হোত এমটিভিতে তাদের গানের ভিডিও প্রচার হোক। এমটিভির কোনো উপস্থাপক একবার মুখ থেকে নবীন কোনো শিল্পীর নাম উল্লেখ করলেই রাতারাতি তিনি পরিচিতি পেয়ে যেতেন।
ইন্টারনেট-পূর্ব বিশ্বে এমটিভির প্রভাব ও গুরুত্বকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রা শুরু করে এমটিভি। শুরু থেকেই পপ সংস্কৃতিতে বৈপ্লবিক রূপান্তর আনতে শুরু করে চ্যানেলটি। রেডিওর গণ্ডি পেরিয়ে টিভিতে গান শোনার ও মিউজিক ভিডিও দেখার নতুন এক ধারায় নেতৃত্ব দেয় এমটিভি।
১৯৯৫ সালে এমটিভি এশিয়ার কার্যক্রম শুরু হয়।
মিউজিক ভিডিও শুরুর আগে স্ক্রিনে এক বা একাধিক ভিজে ও ভিডিও জকিদের দেওয়া বার্তাগুলো অনেকের কাছে গানের চেয়েও বেশি আগ্রহোদ্দীপক ছিল।
ভিজে সোফিয়া, ভিজে সাইরাসের মতো নামগুলো ভারত-বাংলাদেশের ঘরে ঘরে জনপ্রিয় ছিল এক কালে। পরবর্তীতে বলিউডে নাম লেখালেও মালাইকা অরোরা এমটিভির ভিজে হিসেবেই পরিচিত পান।
গত চার দশকে মাইকেল জ্যাকসনের থ্রিলার গানের অনবদ্য মিউজিক ভিডিওর প্রিমিয়ার, বেশ কয়েকটি ব্যান্ড ও শিল্পীর অংশগ্রহণে ১৯৮৫ সালের লাইভ এইড শো সরাসরি সম্প্রচার ও এমটিভি ভিডিও মিউজিক অ্যাওয়ার্ড চালুর মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ অর্জন আছে এমটিভির।
সব মিলিয়ে বলা যায়, কয়েক প্রজন্মের দর্শক-শ্রোতার গান শোনার অভ্যাস গড়ে তোলায় এমটিভি বড় অবদান রেখেছে।
তবে সব ভালোর শেষ আছে।
হালের ইউটিউব, স্ট্রিমিং ভিডিও, স্পটিফাই, ওটিটিসহ অন্যান্য ডিজিটাল সেবার আগ্রাসী প্রচারণায় এমটিভি ধীরে ধীরে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। ভোক্তারাও এসব ডিজিটাল মাধ্যমে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। ভুলে যেতে থাকেন এমটিভির কথা।
পালাবদল/এসএ