বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই ২০২৫ ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই ২০২৫
 
শিক্ষাঙ্গন
‘রুম থেকে বের হয়ে দেখি এত আগুন এত আগুন’





নিজস্ব প্রতিবেদক
Monday, 21 July, 2025
10:24 PM
Update: 21.07.2025
11:26:49 PM
 @palabadalnet

রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর ধ্বংসস্তূপের মধ্য পড়ে আছে এক শিক্ষার্থীর জুতা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর ধ্বংসস্তূপের মধ্য পড়ে আছে এক শিক্ষার্থীর জুতা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা:  রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের সামনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বিভিন্ন তথ্য জানা যাচ্ছে। এখনো আসছে নানা তথ্য। দুই ঘণ্টা আগে ফেসবুকে একটি লেখা শেয়ার করেছেন স্কুলটির শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাশ। দুর্ঘটনার ঠিক আগেই ক্লাস নিয়েছেন তিনি, লিখেছেন সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।

“স্কুল ছুটি হয় দুপুর একটায়। এরপর দুই ঘণ্টা কোচিংয়ের জন্য কিছু ছাত্রছাত্রী স্কুলে ছিল এবং যাদের অভিভাবক তখনও নিতে আসেনি, তারা অপেক্ষা করছিল।

দুপুর একটা ১০ কি ১৫ মিনিটে একটা জেট বিমান (বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান) ক্র্যাশ হয়ে দিয়াবাড়ি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী বিল্ডিংয়ে আগুন ধরে।

ওই বিল্ডিংয়ে বাংলা ভার্সনের ক্লাস থ্রি থেকে ফাইভ আর ইংরেজি ভার্সনের ক্লাস সিক্স থেকে এইটের বাচ্চাদের ক্লাস হয়। আমিও ওখানেই ক্লাস নিই।

আমি ক্লাস শেষ করে ঠিক যেখানে আগুনটা লেগেছে, ওই করিডোর পার হয়ে আমাদের টিচার্স রুমে গেছি। ততক্ষণে ওই বিল্ডিংয়ের আশি ভাগ বাচ্চারা বাড়ি চলে গেছে। এবং তখন বিল্ডিংয়ে ভয়ানক শব্দ, আমি কিছু বোঝার আগে দেখি, ছোট ছোট বাচ্চাগুলো দৌড়ে আসছে। দেখলাম, তাদের সারা গায়ে আগুন। আমি কোনো রকমে ওয়াশরুমে গিয়ে পানি ঢালছি দুই–তিনজনের গায়ে। এমন সময় একজন টিচার চিৎকার করে বলছেন, ‘পূর্ণিমা বের হোন। বের হোন।’

রুম থেকে বের হয়ে দেখি, এত আগুন এত আগুন! সমস্ত করিডোরে আগুন! আমার থেকে দুই হাত দূরে আগুনের মধ্যে আমার একজন সহকর্মী ছুটতে ছুটতে এসে আমার পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়ে বলেন, ‘আমাকে বাঁচান।’ তাঁর সারা শরীর পুড়ে গেছে।

আমি স্থাণুর মতো দাড়িয়ে আছি তখনও। কেউ একজন হ্যাঁচকা টান দিয়ে আমাকে ওই জায়গা থেকে সরায় এবং বিল্ডিংয়ের গ্রিল ভেঙে আমাদেরকে বের করা হয়।

আমার বাচ্চাগুলোকে আমি পাঁচ মিনিট আগেও দেখে এসে পাঁচ মিনিট পরে তাদের পুড়ে যাওয়া শরীর দেখে এসেছি।

ভগবান এ রকম দিন কেন দেখাল জানি না, কেন আমার কোনো আঁচড়ও লাগল না, আমার কেন কিছু হলো না, আমি জানি না। ওই ছোট ছোট বাচ্চাগুলোর মুখ আমার চোখের সামনে ভাসছে। আমার সহকর্মীদের চেহারাগুলো চোখের সামনে ভাসছে।

কত মায়ের বুক আজ খালি হলো। কেন হলো, জানি না।”

পালাবদল/এসএ


  সর্বশেষ খবর  
  সবচেয়ে বেশি পঠিত  
  এই বিভাগের আরো খবর  


Copyright © 2025
All rights reserved
সম্পাদক : সরদার ফরিদ আহমদ
নির্বাহী সম্পাদক : জিয়াউর রহমান নাজিম
ফোন : +৮৮-০১৮৫২-০২১৫৩২, ই-মেইল : palabadal2018@gmail.com