বুধবার ১৪ মে ২০২৫ ৩১ বৈশাখ ১৪৩২
বুধবার ১৪ মে ২০২৫
 
অর্থ-বাণিজ্য
যে কারণে মধ্যরাতে বিলুপ্ত হলো এনবিআর, সরকারের ব্যাখ্যা





নিজস্ব প্রতিবেদক
Tuesday, 13 May, 2025
11:27 PM
 @palabadalnet

এনবিআর ভবন

এনবিআর ভবন

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর বিলুপ্তির ব্যাখ্যা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বলেছে আইন প্রয়োগে অসামঞ্জস্যতা, দুর্বল বিনিয়োগ সুবিধা , সুশাসনের পদ্ধতিগত দুর্বলতা-এসব কারণে এনবিআরের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে গেছে।

তাছাড়া ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এই সংস্থাটি রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে ‘কর-জিডিপির অনুপাতের এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআর পুনর্গঠন জরুরি’।

সোমবার মধ্যরাতে অধ্যাদেশের মাধ্যমে এনবিআর ভেঙে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

ওই অধ্যাদেশে শুধু রাজস্ব নীতি বিভাগের কার্যপরিধিতে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রশাসনিক পদগুলো প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছে।

এনবিআরকে দুই ভাগ করে সরকার যে অধ্যাদেশ জারি করেছে, তা বাতিলের দাবিতে আজ অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে তিন দিনের কলম বিরতির ডাক দিয়েছে শুল্ক ও আয়কর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তৈরি হওয়া ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।

এনবিআরের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে এতোদিন বিসিএস (কর) ও বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা পদায়ন পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু অধ্যাদেশে নীতির সচিব হিসেবে 'উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে' নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে।

ব্যাখ্যায় আরও যা বলেছে সরকার

প্রেস উইংয়ের ব্যাখ্যায় বলা হয় এটি একটি বড় কাঠামোগত সংস্কার এবং এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য হলো রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনা থেকে রাজস্ব নীতি প্রণয়ন কার্যক্রমকে পৃথক করার মাধ্যমে দেশের রাজস্ব ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বার্থের দ্বন্দ্ব হ্রাস এবং রাজস্ব আহরণের আওতাকে সম্প্রসারিত করা।

“পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় আগে প্রতিষ্ঠিত এনবিআর ধারাবাহিকভাবে তার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত প্রায় ৭.৪ শতাংশ, যা এশিয়ার সবচেয়ে কম। এটিকে কমপক্ষে ১০ শতাংশে এ উন্নীত করতে হবে।”

ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়, রাজস্ব নীতি নির্ধারণ এবং প্রয়োগ উভয়ই একই ছাদের নিচে থাকার ফলে কর নীতির সাথে আপোস এবং ব্যাপক অনিয়মের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান ব্যবস্থায় কর আদায়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোনো কাঠামোগত জবাবদিহিতার আওতায় নেই এবং প্রায়শই কর খেলাপিদের কাছ থেকে কর আদায়ের ক্ষেত্রে জনস্বার্থের দিক অগ্রাধিকার না দিয়ে আপোস করেন।

“অনেক ক্ষেত্রে, কর আদায়কারীরা কর ফাঁকিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না এবং ব্যক্তিগত স্বার্থে তাদেরকে উল্টো সহায়তা করে থাকেন।”

একইসঙ্গে দুই দায়িত্ব-নীতি প্রণয়ন এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, উভয়েরই গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছে। যার ফলে ট্যাক্স নেট সংকীর্ণই রয়ে গেছে এবং রাজস্ব আদায় সম্ভাবনার তুলনায় অনেক পিছিয়ে বলে ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে।

“এ সংস্কারের ফলে প্রতিটি বিভাগ তার মূল লক্ষ্য অর্জনে মনোযোগ দিতে পারবে, বিশেষায়িত দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে, স্বার্থের দ্বন্দ্ব কমবে এবং প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে। এই সংস্কার নেট ট্যাক্স সম্প্রসারণ করবে, পরোক্ষ করের উপর নির্ভরশীলতা কমাবে এবং পেশাদার দক্ষ জনবলকে উপযুক্ত কাজে নিযুক্ত করার মাধ্যমে প্রত্যক্ষ কর আদায়কে শক্তিশালী করবে বলে।”

পালাবদল/এসএ


  সর্বশেষ খবর  
  সবচেয়ে বেশি পঠিত  
  এই বিভাগের আরো খবর  


Copyright © 2025
All rights reserved
সম্পাদক : সরদার ফরিদ আহমদ
নির্বাহী সম্পাদক : জিয়াউর রহমান নাজিম
ফোন : +৮৮-০১৮৫২-০২১৫৩২, ই-মেইল : palabadal2018@gmail.com