রবিবার ১১ মে ২০২৫ ২৮ বৈশাখ ১৪৩২
রবিবার ১১ মে ২০২৫
 
রাজনীতি
দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না: মির্জা ফখরুল





চট্টগ্রাম ব্যুরো
Saturday, 10 May, 2025
10:01 PM
Update: 10.05.2025
10:03:18 PM
 @palabadalnet

আজ চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

আজ চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে যারা এখন মাঠে আছে কেবল তারা নয়, দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না। তিনি বলেন, দেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা সঠিকভাবে কাজটি করতে পারছে না। ফলে মাঝেমধ্যেই সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, ষড়যন্ত্রকারীদের শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।

আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী তিন সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত এই সমাবেশে বক্তৃতা করেন তারকা ক্রিকেটার তামিম ইকবাল।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, “চট্টগ্রাম:আমরা কঠিন ও অস্বাভাবিক সময় অতিবাহিত করছি। কারণ শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, তাদের প্রেতাত্মারা এখনো আছে। তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে, বাংলাদেশ তাদের রাজত্ব কায়েম করার জন্য। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না।” 

তিনি বলেন, “দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা যাদের দায়িত্ব দিয়েছি দেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরে নেওয়ার জন্য, তারা সঠিকভাবে এখনো কাজটি করতে পারছে না। ফলে মাঝে মাঝেই সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, তাদের (ষড়যন্ত্রকারীদের) আরও শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে এখানে সমাবেশ হচ্ছে, আরেকটি হচ্ছে চট্টগ্রাম নিউমার্কেটে। আরেকটি হচ্ছে ঢাকায়। দাবিটা কি? আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে, তাই না? আমরা মাঠে যারা আছি তারা শুধু নয়, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চাই না। কারণ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের মানুষের ওপর নির্যাতন করেছে। গণতন্ত্র ধ্বংস, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ও বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে।”

দেশে প্রথম সংস্কার শহীদ জিয়াউর রহমান করেছিলেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শাহাদাতের নয় বছর পর আন্দোলন সংগ্রাম করে বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রকে ফিরে নিয়ে এসেছিলেন। কিছু কিছু মানুষ সব ভুলে যায়, ভুলিয়ে দিতে চায়। তারা মনে করে, সুন্দর সুন্দর মুখরোচক কথা বললেই জাতি বোধ হয় সব ভুলে যাবে।”

তরুণেরা জেগে উঠেছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “মাথা ঠান্ডা রেখে সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিতে হবে। আধুনিক উপযোগী একটি বাংলাদেশ করার শিক্ষা দিচ্ছেন তারেক রহমান। এই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে কোনোভাবেই কোনো কিছু করতে দেব না। আমাদের নেতা বলেছেন, সবার আগে বাংলাদেশ।”

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে, কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। গণতন্ত্রের পথ কেউ যাতে রুদ্ধ করতে না পারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে এগিয়ে যাবো, কারও উসকানিতে পা দেওয়া যাবে না। এটা তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত। আমরা নতুন সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে চাই, সহনশীল থাকতে হবে সবাইকে।”

আমীর খসরু বলেন, “আজকে এখানে তামিম ইকবালকে দেখে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে চট্টগ্রামের তরুণেরা আজকে ছক্কা মেরে দিয়েছে। এই তরুণেরা ফ্যাসিস্ট হাসিনা হটানোর মূল শক্তি। ওয়াসিম আকরামের (জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে শহীদ ছাত্রদল নেতা) জীবন দিয়ে এ আন্দোলন সফল করেছে। সেদিন ছাত্রদল যুবদল বুক পেতে দিয়েছে গুলির সামনে। গণতন্ত্র ও মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তরুণেরা লড়াই করেছে, সব অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য লড়াই করেছে।”

আমির খসরু বলেন, “আমরা ১৬-১৮ বছর আন্দোলন করেছি। মামলা, হামলা, গুম ও খুনের শিকার হয়েছি। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে অনেক নেতা-কর্মীর। আমাদের নেতা-কর্মীরা যার জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করেছে, সেই গণতন্ত্র যেন কেউ জিম্মি করতে না পারে।”

তিনি বলেন, “কারও যদি দর্শন থাকে, ভাবনা থাকে, কর্মসূচি থাকে তাহলে তাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। কিন্তু কারও স্বার্থের জন্য দেশকে জিম্মি করা যাবে না। মানুষের মধ্যে নতুন যে ভাবনা এসেছে তা বুঝতে হবে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা শুনি, ৩১ দফার মধ্যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা অনেক আগেই বলেছে বিএনপি।”

স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন সমাবেশ সঞ্চালনা করেন।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেনসহ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

পালাবদল/এসএফ


  সর্বশেষ খবর  
  সবচেয়ে বেশি পঠিত  
  এই বিভাগের আরো খবর  


Copyright © 2025
All rights reserved
সম্পাদক : সরদার ফরিদ আহমদ
নির্বাহী সম্পাদক : জিয়াউর রহমান নাজিম
ফোন : +৮৮-০১৮৫২-০২১৫৩২, ই-মেইল : palabadal2018@gmail.com