
ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা: ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে ঢাকা মেডিক্যালে তার অপারেশন হয়। ওসমান হাদির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য জানায়নি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদ রায়হান বলেন, তার কন্ডিশন খুবই খারাপ। ক্রিটিক্যাল বলতে যা বোঝায় তাই।
হাসপাতালে নিয়ে আসার পরও তার ‘সাইন অব লাইফ’ বা জীবিত থাকার লক্ষণ ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, অপরেশন চলার সময়েও আমাদের এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞরা বলেছেন উনার এফোর্ট আছে। এর মানে হলো নিজস্ব শ্বাস-প্রশ্বাসের শক্তি আছে। এখনো কিন্তু উনি বেঁচে আছেন।
অপারেশন চলাকালে হাদির দুইবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে বলেও জানান ডা. জাহিদ রায়হান। তিনি বলেন, উনার নাক দিয়ে, মুখ দিয়েও রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছিল। আমরা পেশেন্টের ব্যাপারে কোনো আশার কথা বলব না, তবে উনি এখনো বেঁচে আছেন, বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।
ওসমান হাদির মাথার একপাশ দিয়ে গুলি ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে বলে ধরে নিয়েছেন চিকিৎসকরা, এ কথা জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, বুলেট যদি ভেতরে থেকেও যায়, আমরা ধরে নিলাম মগজের ভেতরে আছে। ওটা একদম মগজের সেন্টার পয়েন্টে। ওখানে অ্যাপ্রোচ করার কোনো প্রয়োজন নেই, ওটা করাও হয় না। তবে বুলেটটা বের হয়ে গেছে। এক দিক দিয়ে ঢুকে আরেক দিক দিয়ে বের হয়ে গেছে। তবে বুলেটের কিছু ফ্রেগমেন্ট (অংশ) ব্রেনের ভেতর থেকে গেছে। আমরা যখন অপারেশন করেছি কিছু ফ্রেগমেন্ট আমরা পেয়েছি। আমরা সেগুলো সংগ্রহ করেছি, খুব ছোট ছোট ফ্রেগমেন্ট।
শুক্রবার দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে হাদিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ইস্রাফিল ফরায়েজী জানিয়েছেন, রাজধানীর বিজয়নগরে তাকে গুলি করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, বেলা ২টা ২৫ মিনিটে একটি মোটরসাইকেলে দুর্বৃত্তরা আসে। মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির পেছনের রিকশায় ছিলেন মো. রাফি। তিনি ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার বর্ণনা দেন।
মো. রাফি বলেন, “জুমার নামাজ শেষে আমরা হাইকোর্টের দিকে আসছিলাম। রিকশায় ছিলাম। বিজয়নগরে আসতেই একটা মোটরসাইকেলে করে দুজন এসে হাদি ভাইয়ের ওপর গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। আমি ভাইয়ের পেছনের রিকশায় ছিলাম।”
এদিকে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ওসমান হাদির গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।
পালাবদল/এসএ