আজ রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২০তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা: সবার জন্য সমান সুযোগ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনো নিশ্চিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, নির্বাচনে অংশ নিতে জামায়াতে ইসলামী প্রস্তুত রয়েছে। তবে সবার জন্য সমান সুযোগ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনো নিশ্চিত হয়নি বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, যদি নির্বাচন হয়, তাহলে তাদের দলের ইশতেহারে প্রথম এজেন্ডা হবে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠন।
একটি নিরপেক্ষ, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ যে রায় দেবে, জামায়াতে ইসলামী তা মাথা পেতে নেবে বলে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন।
আজ সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২০তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
অতীতে সরকারি কর্ম কমিশনগুলোতে (পিএসসি) রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতো লোক নিয়োগ দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এই নায়েবে আমির। তিনি বলেন, “আমরা চাই একটি স্বচ্ছ, মেধাভিত্তিক ও দলনিরপেক্ষ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি), যাতে দেশের প্রশাসনে আর কোনো ‘স্বৈরাচারী প্রেতাত্মা’ শাসন করতে না পারে।”
সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, অতীতে অনেক মেধাবী তরুণ রাজনীতিক পরিচয়ের কারণে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বা চাকরি হারিয়েছেন, যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাষ্ট্র। তিনি বলেন, “আমাদের পাশের দেশগুলোতে পিএসসি নিয়ে কোনো আপস হয় না। যোগ্যদের সুযোগ দিতে হয়। কারণ, রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করতে হলে প্রশাসনে মেধার মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হয়।”
“বর্তমান পদ্ধতিতে প্রশাসনে নিয়োগ অনেক সময় ‘ড্রয়ারের একটি স্লিপ’ থেকে নির্ধারিত হয়” উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, “আমরা চাই, পিএসসি হোক একটি সংবিধানে সুরক্ষিত, স্বাধীন প্রতিষ্ঠান-যেখানে কোনো মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী বা দলের হস্তক্ষেপ থাকবে না।”
আজকের আলোচনার মূল বিষয় ছিল কয়েকটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের-বিশেষ করে পিএসসি, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), মহাহিসাবরক্ষক এবং ওমবাডসম্যান-সংস্কার ও সংবিধানে সুরক্ষিত করা।
তাহের বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সংবিধানে এই বিষয়গুলোর সুরক্ষার পক্ষে একমত। তবে বিএনপিসহ কয়েকটি দল আইন দিয়ে সুরক্ষার পক্ষে যুক্তি দিয়েছে। কারণ, সংবিধান সংশোধন কঠিন। তিনি বলেন, “আইনের মাধ্যমে করলে যেকোনো সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সকাল-বিকেল আইন পরিবর্তন করতে পারে। তাই সংবিধানে রাখতে হবে, যাতে স্থায়িত্ব থাকে এবং দলীয় সুবিধার সুযোগ না থাকে।”
সংলাপে বিএনপির ওয়াকআউট প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর এ নায়েবে আমির বলেন, “তাদের ধন্যবাদ জানাই যে তারা পুরো অনুষ্ঠান বর্জন করেনি, পরে অংশগ্রহণ করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা বিরোধী দল বা সরকার, এভাবে দেখি না; বরং আমরা দেখি কোন প্রস্তাবটা দেশের জন্য সবচেয়ে উপযোগী।”