প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে প্যারিস সঁ জরমঁ (পিএসজি)। সেই আনন্দে আত্মহারা সমর্থকেরা। প্যারিসে জয়ের উৎসব চলছিল। মুহূর্তের মধ্যে যা বদলে গেল তাণ্ডবে। উৎসবের মাত্রা বদলে গেল বার বার। উন্মত্ত উল্লাসে ঘটল একের পর এক দুর্ঘটনা। যা প্রাণ কেড়ে নিল দু’জনের। আহত অসংখ্য পুলিশকর্মী। কোমায় রয়েছেন একজন। গ্রেফতার হয়েছেন ৫০০-র বেশি।
উল্লাসের মাঝে মারা গিয়েছে ১৭ বছরের একটি ছেলে। তার বুকে ছুরি মারা হয়েছে। ২৩ বছরের এক জন স্কুটার চালাচ্ছিলেন। তাকে ধাক্কা মারে একটি গাড়ি। দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে। প্যারিসে বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে গাড়িতে। বিভিন্ন যাত্রী প্রতীক্ষালয়েও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। সমর্থকেরা বাজি পোড়াচ্ছিলেন, সেই আগুন ছড়িয়ে যায় চারদিকে।
ফ্রান্সের সরকারের তরফে জানানো হয়েছে এখনও পর্যন্ত ১৯২ জন আহত। গ্রেফতার করা হয়েছে ৫৫৯ জনকে। এর মধ্যে ৪৯১ জনই প্যারিসের। ২২ জন পুলিশকর্মী এবং সাত জন দমকলকর্মী আহত হয়েছেন। ২৬৪টি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রিয় দলের জয়ের পর উৎসব হঠাৎ করেই রূপ বদলায়। রাস্তার ধারের বিভিন্ন দোকানে লুট চালায় অনেকে।
বিভিন্ন জায়গায় গণ্ডগোল হলেও প্যারিসের শঁজে লিজে এবং পার্ক দ্য প্রাঁসের সামনে সমর্থকেরা যথেষ্ট শান্ত ভাবেই উৎসব পালন করেন। সেখানে সমর্থকেরা রাস্তায় নেমে গান গাইছিলেন, নাচছিলেন গাড়ির হর্ন বাজাচ্ছিলেন।
সমর্থকদের উৎসবের রূপ যে এতটা বীভৎস হতে পারে তার আন্দাজ ছিল। সেই কারণে প্যারিস জুড়ে ৫৪০০ পুলিশকর্মীকে নামানো হয়েছিল। আইফেল টাওয়ারের রং পাল্টে পিএসজি-র দলের রংয়ে রাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
ফ্রান্সের ফুটবল সমর্থকদের এই হিংস্র রূপ যদিও নতুন নয়। এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে পিএসজি খেলতে যাওয়ার সময় তাদের সমর্থকেরা সেখানে গিয়ে গণ্ডগোল করেছেন। পিএসজি আল্ট্রা নামে সমর্থকদের একটি গ্রুপ রয়েছে। সেই সমর্থকদের কুখ্যাত রূপ বিশ্ব ফুটবল আগেও দেখেছে। অনেকের হাতে আগ্নেয়স্ত্র দেখা গিয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই কারণেই শনিবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্যারিসের ফুটবল দলটি জিততেই গণ্ডগোল শুরু হয়ে যায়।
জার্মানি ছিল এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল। সেখানে ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই মাঠে ঢুকে পড়েন সমর্থকেরা।