ভারত যাতে পাকিস্তানমুখী নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করতে না-পারে, তা নিশ্চিত করছে ইসলামাবাদ। এমনটাই দাবি করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বুধবার আজারবাইজানের লাচিন শহরে একটি ত্রিদেশীয় সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ছিলেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এবং পাকিস্তানের আর এক বন্ধু দেশ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইয়েপ এরদোগান। তাদের পাশে নিয়েই এই দাবি করেছেন শাহবাজ। সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার যে সিদ্ধান্ত ভারত নিয়েছে, তাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ভারত-পাক সংঘাত পরবর্তী সময়ে চতুর্দেশীয় সফরে গিয়েছেন শাহবাজ। সংঘাতের সময়ে যে দেশগুলি পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল, তাদের ধন্যবাদ জানাতেই তার এই সফর। পাক প্রধানমন্ত্রী প্রথমে গিয়েছিলেন তুরস্কে। সেখান থেকে ইরানে যান তিনি। সেখান থেকে বুধবার পৌঁছেছেন আজারবাইজানে। এখন সেখানেই রয়েছেন।
বুধবার আজারবাইজানে তুরস্ক-পাকিস্তান-আজারবাইজানকে নিয়ে একটি ত্রিদেশীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, সেখানেই ভারতের সঙ্গে সংঘাত, কাশ্মির প্রসঙ্গ এবং সিন্ধু চুক্তির প্রসঙ্গ ওঠে। শাহবাজ বলেন, “আমরা শান্তি চাই। তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনায় বসা দরকার। যেমন কাশ্মির। জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী, কাশ্মিরের মানুষের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী এই সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন।”
জম্মু-কাশ্মিরের পহলেগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত পদক্ষেপ করেছে ভারত, তার মধ্যে অন্যতম সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বার বার বলেছেন, “পানি এবং রক্ত পাশাপাশি বইতে পারে না।’’ পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে মদত দেওয়া বন্ধ না-করা পর্যন্ত চুক্তি স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছে ভারত। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তিকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে ভারত। তা ২৪ কোটি পাকিস্তানির ‘লাইফলাইন’। পাকিস্তানের দিকে বয়ে আসা পানি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ভারত, এটা দুর্ভাগ্যজনক। এটা কখনও সম্ভব ছিল না, সম্ভব নয় এবং সম্ভব হবেও না। ভারত যাতে এটা করতে না পারে, আমরা তা নিশ্চিত করতে উপযুক্ত বন্দোবস্ত করছি।”
সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি পাকিস্তান, দাবি শাহবাজের। তার কথায়, “ভারত যদি সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা প্রসঙ্গে কথা বলতে চায়, আমরা রাজি। কিন্তু সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী পাকিস্তান। ৯০ হাজার পাকিস্তানির প্রাণ গিয়েছে এতে। ভারত যদি এটা ধ্বংস করতে চায়, আমাদের সহযোগিতা চায়, আমরা রাজি আছি। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের প্রসার নিয়েও আলোচনা করা যায়।” এই বিষয়গুলিতে বন্ধু তুরস্ক এবং আজারবাইজানকে পাশে চান, জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। চতুর্দেশীয় সফরের শেষ দেশ হিসাবে তাজিকিস্তানে যাওয়ার কথা তার।