ময়মনসিংহ: ভালুকায় ‘মাদকাসক্ত মানসিক ভারসাম্যহীন’ এক যুবকের বিরুদ্ধে নিজের ভাবি ও প্রতিবেশী এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের পাঁচগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও চারজন।
খবর পেয়ে পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করেছে। ওই ব্যক্তির নাম মো. সাইদুল মিয়া (৪০)। তিনি ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের পাঁচগাঁও গ্রামের আপ্তাব উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ জানায়, সাইদুল মিয়া পেশায় দিনমজুর। ছোটবেলায় মানসিক ভারসাম্যহীন হলেও চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু কয়েক বছর ধরে মাদকাসক্ত হয়ে প্রায়ই পাগলামি করতেন। কয়েক দিন ধরে মাত্রাতিরিক্ত পাগলামি শুরু করায় তাকে বাড়িতে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঘরের জানালা ভেঙে বের হয়ে পড়েন সাইদুল মিয়া। কিছুক্ষণ বাইরে ঘোরাঘুরির পর বাড়ির কাছে নিজের বড় ভাই শহীদ মিয়ার স্ত্রী হাফেজা আক্তারকে (৫২) ঘাস কাটার কাঁচি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। এরপর বাড়ির উঠানে ধান মাপার কাজ করার সময় একই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আশরাফ আলীকে (৭০) কোদাল দিয়ে কোপ দেন। তাকে উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় সাইদুল মিয়ার আক্রমণে একই গ্রামের আবদুস সামাদ (৩৫), সাকিম মিয়া (৩৫), বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী শিকদার (৭৫) ও সাইদুলের মামি জেবুন নাহার (৫০) আহত হন। তাদের ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানার পুলিশ নিহত দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পাশাপাশি এলাকা থেকে অভিযুক্ত সাইদুল মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোদাল জব্দ করা হয়।
ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, সাইদুল মিয়া মাদকাসক্ত হয়ে পাগলামি করতেন। দুই–তিন ধরে বেশি পাগলামি করায় তাকে ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। কিন্তু আজ ঘরের জানালা ভেঙে বের হয়ে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটান। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।