বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা: রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনীকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি।
আজ রোববার রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “কাল একটা ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে, সেজন্য যাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ তাদের আমি আগেই "কংগ্রাচুলেশন" জানিয়েছি। আমি এই অন্তর্বর্তী সরকারের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের আইন সংশোধনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসার যে সংশোধন, সেটাকে স্বাগত জানাই।”
বিএনপির পক্ষ থেকে আগেই আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিচারের মুখোমুখি করার প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “এই দাবি ফেব্রুয়ারির পাঁচ তারিখে দলের পক্ষ থেকে আমি বক্তব্য দিয়ে সরাসরি উত্থাপন করেছিলাম। তার আগে ও পরে অনেক জায়গায় আমরা দলীয়ভাবে এই দাবি উত্থাপন করেছি।”
“আমরা ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দলীয়ভাবে সাক্ষাৎ করতে গেলে লিখিতভাবে সেই প্রস্তাব আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে দিয়েছি, সেখানে আইন উপদেষ্টাও ছিলেন। সেখানে আমরা বলেছি গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিচারের আওতায় আনতে হবে,” বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের বিচারের জন্য আইন সংশোধনের পর এর সুষ্ঠু প্রয়োগের জন্য আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের প্রতি অনুরোধ জানান বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, “আমি আইন উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানাব যে আইনটা যেন সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করা হয়। যেন ন্যাশনালি এবং ইন্টারন্যাশনালি এটা বলতে না পারে যে, এটা সুষ্ঠুভাবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি, সেই বদনাম যেন আমাদের না হয়।”
আওয়ামী লীগের বিচারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য পলিটিক্যাল পার্টি হিসেবে আওয়ামী লীগ ও তার অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার জন্য যে বিধানটা করা হবে, সেই আইনে সন্ত্রাস দমন আইনে কিছুটা সংশোধনী আনতে হবে মনে হয়।”
“কারণ সেখানে দল নিষিদ্ধের কথা বলা আছে। সম্ভবত কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে গেলে সেখানে কিছু সংশোধনী আনতে হবে। সেটা এনে তারপর প্রজ্ঞাপন হলে ভালো হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদের রক্তের প্রত্যাশা-আকাঙ্ক্ষা, এ দেশের জনগণের প্রত্যাশা যে, বাংলাদেশে যেন কোনোদিন স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের উৎপাদন না হয়,” বলেন তিনি।
এছাড়া, বক্তব্যে তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য জাতীয় ঐক্য, বিচার বিভাগ সংস্কার, সংবিধান সংস্কার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের সংস্কারের বিষয়গুলোয় আলোকপাত করেন।
বিভিন্ন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ে গঠিত ‘নাগরিক কোয়ালিশন’ আয়োজিত এ সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আলোকচিত্রী ও নাগরিক কোয়ালিশনের সহ-আহ্বায়ক শহিদুল আলম।
অনুষ্ঠানে সংবিধান সংস্কার নিয়ে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, এসব প্রস্তাব কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে তা তুলে ধরেন অর্থনীতিবিদ ও লেখক জিয়া হাসান।