আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে শাহবাগ মোড়ে অবরোধ। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা: আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে এবার রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করলেন আন্দোলনকারীরা। আজ শুক্রবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন তাঁরা। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের কাছের ফোয়ারার পাশে তৈরি করা মঞ্চ থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করার ঘোষণা দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে এসে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। সেখানে অবস্থান নিয়ে তাঁরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
এর আগে জুমার নামাজের পর থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার কাছের ফোয়ারার পাশে মঞ্চ তৈরি করে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে মঞ্চ থেকে শাহবাগ অবরোধ করার ঘোষণা দেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
এ সময় এনসিপির এই নেতা বলেন, “বাংলাদেশের অগ্রগতি সেদিন থেকে শুরু হবে, যেদিন থেকে টাইটেলটা হবে, বাংলাদেশ উইদাউট আওয়ামী লীগ (আওয়ামী লীগহীন বাংলাদেশ)। আমাদের কথা অন্তর্বর্তী সরকারের কর্ণকুহরে প্রবেশ করেনি। তাই এখন আমরা শাহবাগ ব্লকেড করব। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন না আসা পর্যন্ত আমরা শাহবাগে থাকব। এখান থেকে আমাদের দ্বিতীয় অভ্যুত্থান–পর্ব শুরু হবে।”
আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থানের ঘোষণা দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। পরে রাত ১০টার দিক থেকে যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতা-কর্মীরা হাসনাতের সঙ্গে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন। পরে রাত একটার দিকে মিছিল নিয়ে যমুনার সামনে যান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তাদের সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও ছিলেন।
এনসিপির পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও রাতে বিক্ষোভে যোগ দেন। রাত একটার পর হেফাজতে ইসলামের বেশ কিছু নেতা-কর্মী যমুনার সামনে যান। রাত দেড়টার দিকে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির কিছু নেতা-কর্মী সেখানে উপস্থিত হন। রাত দুইটার দিকে সেখানে যান ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা।
রাতভর বিক্ষোভ চলার পর আজ সকালে সেখানে যোগ দেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। সকাল সাড়ে আটটার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ ও এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ঘোষণা দেন, বাদ জুমা যমুনার পূর্ব পাশে ফোয়ারার সামনে বড় জমায়েত করা হবে। একই সঙ্গে বিক্ষোভ কর্মসূচিও চলমান থাকছে।
এ ঘোষণা দেওয়ার সময় জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুল ইসলাম মাসুদসহ ইসলামপন্থী কয়েকটি দলের নেতা-কর্মীরা হাসনাত ও নাসীরুদ্দীনের সঙ্গে ছিলেন। হাসনাতদের এ ঘোষণার পর সেখানে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়। পাঁচটি পিকআপ ভ্যান একত্র করে এই মঞ্চ তৈরি করা হয়।
দুপুর ১২টার দিকে যমুনার সামনে থেকে সরে ফোয়ারার সামনের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। জুমার নামাজের পর এই মঞ্চের সামনে বড় জমায়েত হয়। এনসিপির পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত ছাত্র মজলিসসহ বিভিন্ন সংগঠন ও দলের নেতা-কর্মীরা এই কর্মসূচিতে যোগ দেন। দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের কয়েকজন সেখানে বক্তব্য দেন। পরে হাসনাত আবদুল্লাহ শাহবাগ অবরোধ করার ঘোষণা দেন।