রবিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ৭ পৌষ ১৪৩২
রবিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
 
জাতীয়
শহীদ ওসমান হাদির ঐতিহাসিক জানাজা এক জনসমুদ্র





নিজস্ব প্রতিবেদক
Saturday, 20 December, 2025
9:45 PM
 @palabadalnet

 শহীদ ওসমান হাদির ঐতিহাসিক জানাজা এক জনসমুদ্র। ছবি: সংগৃহীত

শহীদ ওসমান হাদির ঐতিহাসিক জানাজা এক জনসমুদ্র। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: শনিবার লাখো মানুষের অংশগ্রহণে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা এলাকায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির স্মরণকালের ঐতিহাসিক সবচেয়ে বড় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জানাজায় বহু মানুষের জনসমাগম হয়েছিল।

শহীদ শরিফ ওসমান হাদির জানাজায় অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতারা, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান, বিদেশি রাষ্ট্রদূত এবং সর্বোপরি বিভিন্ন দল-মত ও শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হাদির জানাজায় অংশ নেন।

শনিবার সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্র-জনতা এবং সাধারণ মানুষ দলে দলে জানাজাস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা ১২টা বাজার আগেই পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মানুষের ভিড় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর বিশাল রাজপথ ছাপিয়ে ফার্মগেটের খামারবাড়ি ও আসাদগেট পর্যন্ত চলে যায়। উত্তর দিকে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র পর্যন্তও ছিল মানুষ আর মানুষ।

হাদির জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও এর আশপাশের সকল প্রবেশ পথে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি র‍্যাব ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছিলো। বিশেষ টহলে ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এক হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরাসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করেছে পুলিশ প্রশাসন। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘর থেকে সহযোদ্ধা ও সমর্থকদের অংশগ্রহণে একটি বিশাল শোক মিছিলের মাধ্যমে হাদির লাশ জানাজার স্থলে নিয়ে আসা হয়।

জানাজা শেষে শহীদ হাদির পরিবারের বিশেষ ইচ্ছা এবং সহযোদ্ধা ও ঢাবি কর্তৃপক্ষের পরামর্শে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ কমপ্লেক্সে থাকা জাতীয় ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।

গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) জুমার নামাজ শেষে রাজধানীর বিজয় নগরের কালভার্ট রোড এলাকায় নির্বাচনি প্রচার চালানোর সময় তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। ওই সময় বিন হাদি একটি রিকশায় যাচ্ছিলেন, আর মোটরসাইকেলে এসে সরাসরি মাথায় গুলি করে সন্ত্রাসীরা।

তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিকভাবে অস্ত্রপচারের পর এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে পরিবারের সিদ্ধান্তে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয় এই বিপ্লবীকে। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বিন হাদি।

এরপর গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছায়। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শহীদ ওসমান হাদির লাশ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের হিমঘরে নেওয়া হয়।

গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে ওসমান বিন হাদি তরুণ প্রজন্মের কাছে সাহসিকতা ও দেশপ্রেমের এক মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। যার প্রতিফলন আজ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে লাখ লাখ মানুষের এই উপচে পড়া ভিড়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

পালাবদল/এসএ


  সর্বশেষ খবর  
  সবচেয়ে বেশি পঠিত  
  এই বিভাগের আরো খবর  


Copyright © 2025
All rights reserved
সম্পাদক : সরদার ফরিদ আহমদ
নির্বাহী সম্পাদক : জিয়াউর রহমান নাজিম
ফোন : +৮৮-০১৮৫২-০২১৫৩২, ই-মেইল : palabadal2018@gmail.com