নোয়াখালী: হাতিয়ায় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা একটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত উপজেলার তমরুদ্দি বাজারের আশপাশে দফায় দফায় ওই হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান ওরফে শামীম এবং হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিমের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ২৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা বিমান চন্দ্র আচার্য্য। তাদের মধ্যে মো. রাহুল (২০), মো. রাসেল (৩৮), মো. মেরাজ (৩০) ও মো. আলা উদ্দিন ওরফে জাহেরের নাম জানা গেছে। গুরুতর আহত মো. আলা উদ্দিনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে তমরুদ্দি বাজারে আজ বেলা তিনটায় ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের একটি অংশ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয় কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান ওরফে শামীমকে। আনুমানিক বেলা একটায় শামীমের অনুসারীরা ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আসা শুরু করেন। পথে তমরুদ্দি বাজারে তাদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শামীমের অনুসারীদের অভিযোগ, সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিমের অনুসারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবিরের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ নিয়ে বাজারের আশপাশে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। পরে খবর পেয়ে হাতিয়া থানার পুলিশ এবং নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলমগীর কবির ও শামীমের অনুসারীদের সরিয়ে দিয়ে মাঝখানে অবস্থান নেন। হামলা-সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের ২৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আর বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মাহবুবের রহমান শামীমের পক্ষের উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, দলের উদ্যোগে তারা তমরুদ্দি বাজারে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আসার পথে কর্মীদের ওপর হামলা করেন দল থেকে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আলমগীর কবিরের লোকজন। এতে দলের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
অপর দিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, “তমরুদ্দি এলাকায় আমাদের পক্ষের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় পাঁচ-ছয়জন আহত হয়েছে। আমাদের কোনো লোক কারও ওপর হামলা করেনি।”
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আজমল হুদা বলেন, তমরুদ্দি বাজারে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায় দফায় হামলা-সংঘর্ষ হয়েছে। দুই পক্ষই মারমুখী ছিল। তবে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।