আবারও হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন বার্তা সংস্থা এপির সাংবাদিক। এবার মোদি-ট্রাম্পের সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিতে যেয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়েন ওই সাংবাদিক।
আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
এ নিয়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো একই ধরনের ঘটনা ঘটল।
সম্প্রতি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে গালফ অব মেক্সিকোর নাম বদলে গালফ অব আমেরিকা রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে এই নির্দেশনা মানতে রাজি নয় এপি। এ ঘটনার সূত্রেই হোয়াইট হাউসের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে এই স্বনামধন্য বার্তা সংস্থার।
ওভাল অফিসে এর আগে দুইবার প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন এপির হোয়াইট হাউস সংবাদদাতা।
আজ শুক্রবার এপি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তাদের সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
এপির এডিটর ইন-চিফ জুলি পেইস ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে 'অত্যন্ত উদ্বেগজনক' বলে অভিহিত করেন। তিনি দাবি করেন, এই উদ্যোগ এপির মত প্রকাশের স্বাধীনতার 'স্পষ্ট লঙ্ঘন', যা সংবাদ মাধ্যমটির সাংবিধানিক অধিকার।
এএফপিকে দেওয়া বিবৃতিতে জুলি বলেন, 'টানা তিন দিন ধরে এপির সাংবাদিকদের প্রেসিডেন্টের ওপর তথ্য সংগ্রহ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এপির পক্ষপাতহীন সংবাদের ওপর ভরসা করেন এমন লাখো মানুষের প্রতি এটা অবিশ্বাস্য পর্যায়ের অন্যায়।'
মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো ওভাল অফিসে প্রবেশ করতে যেয়ে বাধার মুখে পড়েন এপির এক অজ্ঞাতনামা সাংবাদিক। এপির সম্পাদকীয় নীতিমালাকে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার নির্দেশ দেওয়ায় হয়।
বুধবার আবারও ওই সাংবাদিক ওভাল অফিসে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হন। সেদিন তিনি মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার নতুন পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ডের শপথ গ্রহণে যোগ দিতে গিয়েছিলেন।
গত মাসে প্রকাশ করা স্টাইল নোটে এপি জানান, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এই বিধিনিষেধের বিষয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট বুধবার জানান, ট্রাম্প প্রশাসন গণমাধ্যমের 'মিথ্যার' বিরুদ্ধে নিজেদেরকে সুরক্ষিত রাখছে।
তিনি উল্লেখ করেন, আনুষ্ঠানিকভাবে মেক্সিকো উপসাগরের নতুন নামকরণ হয়েছে এবং ইতোমধ্যে গুগল ও অ্যাপল তাদের জনপ্রিয় ম্যাপে এই পরিবর্তন সংযুক্ত করেছে।
“এতে কোনো সন্দেহ নেই লুইজিয়ানার উপকূল থেকে পানির অংশটুকু গালফ অব আমেরিকা। আমি নিশ্চিত নই কেন সংবাদ মাধ্যমগুলো ওটাকে এ নামে ডাকতে চাইছে না। কিন্তু এটাই সত্য”, যোগ করেন লেভিট।
হোয়াইট হাউস করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এপিকে মোদির সংবাদ সম্মেলনে প্রবেশ করতে না দেওয়ার বিষয়টিকে 'অস্বাভাবিক ও অত্যন্ত হতাশাজনক' বলে অভিহিত করে।
সংস্থার প্রেসিডেন্ট ইউজিন ড্যানিয়েলস এক বিবৃতিতে বলেন, “একটি মুক্ত গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে সরকারি সেন্সরশিপ আরোপের এই প্রচেষ্টা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার চর্চাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।”
“এটা শুধু সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘনই নয়, এটা একইসঙ্গে প্রেসিডেন্টের বাকস্বাধীনতা ও সরকারি সেন্সরশিপ বন্ধের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধাচারণ”, যোগ করেন ড্যানিয়েলস।