পটুয়াখালী: কলাপাড়ায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের রজপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বাড়িটির বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
নুরুজ্জামান কাফি ওই গ্রামের এ বি এম হাবিবুর রহমানের ছেলে। হাবিবুর রহমান বলেন, “রাতে আমাদের ঘরটিতে দুর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। যে যার মতো করে দরজা ভেঙে আমরা বের হয়েছি। কিছু রক্ষা করতে পারি নাই; সব শেষ হয়ে গেছে। আমাদের পুড়িয়ে মারার জন্যই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা এ নাশকতার তদন্তপূর্বক বিচার চাই।”
কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ইলিয়াস হোসাইন বলেন, “রাত সোয়া দুইটার সময় নুরুজ্জামান কাফির বাড়িতে আগুন লাগে। আমরা খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। বাড়ির বেশির ভাগ অংশ পুড়ে গেছে। তবে পাশের গোয়ালঘরটাকে নিরাপদ রাখতে পেরেছি। মানুষজনের কোনো ক্ষতি হয়নি। বাড়ির সবাই নিরাপদে ও অক্ষত আছেন।”
প্রতিবেশী ওয়ালি উল্লাহ ইমরান বলেন, “আমরা আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে আমরাও আগুন নির্বাপণের কাজে নেমে যাই। বাইরে থেকে দরজা-জানালার ছিটকিনি লাগানো ছিল, এতেই বোঝা যায়, এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ছিল।”
অগ্নিকাণ্ডের সময় নুরুজ্জামান কাফি বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে বাড়িতে পৌঁছান।
আজ বুধবার সকাল ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে নুরুজ্জামান কাফি সাংবাদিকদের জানান, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙার অভিযানে তিনিও ছিলেন। তার দাবি এ কারণে প্রতিশোধ নিতে তার বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমি ঢাকায় ছিলাম। জুলাই মুভমেন্ট আমি ছিলাম সামনের সারির একজন। ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এ ছাড়া আরও বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে আমি প্রতিবাদ করে থাকি, কথা বলে থাকি। আমার বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে তারাই জড়িত, যাদের বিরুদ্ধে আমি সব সময় সোচ্চার।”
নুরুজ্জামান কাফি আরও বলেন, “আমার বাড়িতে থাকা জায়গাজমির দলিলসহ মূল্যবান সবকিছু পুড়ে গেছে। পরিকল্পনা করে আমার বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এ নাশকতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সেটা করতে ব্যর্থ হলে আমি এর বিরুদ্ধে রাজপথে লড়াইয়ে নামব।”
ফায়ার সার্ভিস জানায়, কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ভোর সাড়ে ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
খেপুপাড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার ইলিয়াস হোসেন বলেন, “খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তার আগেই পুরো বাড়ি আগুনে পুড়ে যায়। ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন, তাদের বাড়ির দরজা কে বা কারা বাইরে থেকে আটকে দিয়েছিল, বিষয়টি সন্দেহজনক ও পরিকল্পিত বলে মনে করছেন তারা।”
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, “খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কাজে সহায়তা করে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”