বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ ১৩ চৈত্র ১৪৩১
বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫
 
রাজধানী
শাহবাগে অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের জলকামান





নিজস্ব প্রতিবেদক
Monday, 10 February, 2025
2:45 PM
 @palabadalnet

আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করা ব্যক্তিদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। এ ছাড়া জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে।

আজ সোমবার বেলা ২টার দিকে পুলিশ এসব আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়। তবে পুলিশের লাঠিপেটার পরও কয়েক শ নারী ও পুরুষ শাহবাগ ছাড়েননি। এ ঘটনায় শাহবাগে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ হাজার ৫৩১ জনের দ্রুত নিয়োগের দাবিতে শাহবাগ মোড় আজ বেলা ১টার দিক অবরোধ করা হয়। অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুপারিশপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষকবৃন্দ তৃতীয় ধাপ (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) ’-এর ব্যানারে আন্দোলনকারীরা সকাল থেকে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান করছিলেন। বেলা একটার দিকে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

প্রথম আলোর প্রতিবেদক ঘটনাস্থল থেকে জানান, বেলা ২টার দিকে পুলিশের একটি দল এসে শিক্ষকদের সেখান থেকে উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে তাদের সেখান থেকে তুলে দিতে প্রথমে লাঠিপেটা ও পরে জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে পুলিশ।

আন্দোলনকারীরা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, “প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম ও অপেক্ষমান তালিকা থেকেও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে প্রহসন যেন থামছেই না। ২০২৩ সালের ১৪ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের ২৯ মার্চ। এ ধাপের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয় ২০২৪ সালের ২১ এপ্রিল এবং ভাইভা সম্পন্ন হয় ১২ জুন। আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়। ৩১ জন হাইকোর্টে রিট করে, যারা সুপারিশপ্রাপ্ত হয়নি। এর প্রেক্ষিতে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত হয়ে যায়। ইতোমধ্যে চেম্বার জজ আদালত, আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্টে চারটি শুনানির পর চূড়ান্ত জাজমেন্টে ৬ তারিখ বাতিল ঘোষণা করে দেন।”

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৫ ডিসেম্বর জেলা শিক্ষা অফিস এবং ৮ ডিসেম্বর স্কুল পদায়ন সম্পর্কিত নিয়োগ আদেশ জারি করা হয়। নিজ নিজ জেলা সিভিল সার্জনে মেডিকেল টেস্ট এবং জেলা শিক্ষা অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাদানও সম্পন্ন করা হয়েছে। অনেক জেলার কিছু কিছু উপজেলায় চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তরা যোগদানপত্রও হাতে পেয়েছেন। সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও যোগদান করতে না পেরে ৬ হাজার ৫৩১টি পরিবারকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে। সবাই এক প্রকার মানসিক বিপর্যয় ও মানবেতর জীবনযাপন করছি।”

তারা বলেছে, “২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর আমাদের যোগদান করার কথা, কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে আমরা যোগদান করতে পারিনি। যারা সুপারিশপ্রাপ্ত হয়নি এমন ৩১ জনের রিটে এ ফলাফল বাতিল করলো। এ কেমন প্রহসন। এ দায়ভার আসলে কে নিবে? আমরা একপ্রকার মানবেতর জীবনযাপন করছি।”

“প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশ করেছে। আর এতে আমরা ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। এটাই কি আমাদের অপরাধ?”

“নিয়োগপত্র পাওয়ার পরও কর্মস্থলে যোগদান করতে না পেরে আজ রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হচ্ছে। এটা যে কতটা বেদনাদায়ক তা কেবলমাত্র একজন ভুক্তভোগী বুঝতে পারবে। আমাদের মধ্যে অনেকেরই বয়স শেষ, তাদের আর কোনো চাকরিতে আবেদন করার সুযোগও নাই।”

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “আমাদের একটাই দাবি দ্রুত এর সমাধান করে আমাদের যোগাদানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।”

পালাবদল/এসএ


  সর্বশেষ খবর  
  সবচেয়ে বেশি পঠিত  
  এই বিভাগের আরো খবর  


Copyright © 2024
All rights reserved
সম্পাদক : সরদার ফরিদ আহমদ
নির্বাহী সম্পাদক : জিয়াউর রহমান নাজিম
ফোন : +৮৮-০১৮৫২-০২১৫৩২, ই-মেইল : palabadal2018@gmail.com