নরসিংদী: জেলা আদালত প্রাঙ্গণে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সেই সময় পুলিশ হেফাজতে হাজিরা দিতে আসা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালান তারা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে এই ঘটনা ঘটে।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে নরসিংদী মডেল থানা পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে।
তারা হলেন-মাধবদী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুব হোসেন মনির (২৮), শিবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফাজায়েল ভূঁইয়া রয়েল (২৫), পলাশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩০), পলাশ থানা ছাত্রলীগের সদস্য মো. রাজু মিয়া (৩১), মো. আমিনুল ইসলাম (২৬), উপজেলার জিনারদী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি তারেক আকন্দ (২৮), শিল্পাঞ্চল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান (২৫), বেলাব উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক ভূইয়া (২৮), শিবপুর থানা ছাত্রলীগের সদস্য মো. ফরহাদ আফরাদ (১৮) ও মনোহরদী থানা ছাত্রলীগের সদস্য মো. জাহিদ মোল্লা (২৪)।
নিষিদ্ধ ঘোষিত ১০ ছাত্রলীগ নেতার রিমান্ড শুনানিকে কেন্দ্র করে এদিন সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু হয়। আদালতে নেওয়ার সময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে তাদের মারধর করা হয়। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা আদালত প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি দ্বিতীয়বারের মতো ভাঙচুর করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, হামলার সময় আসামিদের গারদে ঢুকিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
নরসিংদী আদালতের সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) রাকিব হাসান বলেন, “ছাত্রলীগের প্রতি দীর্ঘ দিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে সাধারণ জনতা আন্দোলন করেছে। তবে, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা আমরা শুনিনি।”
তিনি জানান, আদালত ১০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, সকাল ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন।
জানতে চাইলে শহর ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রার্থী ও নেতা ফাহিম রাজ অভি বলেন, 'শেখ হাসিনা ভারতে বসে গতকাল ভাষণ দিয়েছেন, যা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য উসকানি দিয়েছে। আমরা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিচারের দাবিতে আদালতে উপস্থিত হয়েছি।'
তবে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী আদালতের পুলিশ পরিদর্শক খন্দকার জাকির হোসেন। তিনি বলেন, “ছাত্র-জনতা আগে থেকেই আদালতে অবস্থান করছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”