বৃহস্পতিবার ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বৃহস্পতিবার ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
 
সারাবাংলা
বন্যা: লালমনিরহাট-কুড়িগ্রামে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি





পালাবদল ডেস্ক
Sunday, 29 September, 2024
8:15 PM
Update: 29.09.2024
8:30:04 PM
 @palabadalnet

বন্যার কারণে অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন। ছবি: সংগৃহীত

বন্যার কারণে অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন। ছবি: সংগৃহীত

তিস্তাপাড়ের বন্যায় লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের আট উপজেলায় ১৫ হাজার পরিবারের প্রায় ৬০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। 

তাদের অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও গবাদিপশু-পাখি নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন সরকারি রাস্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর।  লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা রেলস্টেশনের কাছে রেললাইনের ওপর বন্যার পানি উঠায় লালমনিরহাট-ঢাকা রেলরুটে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বন্যাদুর্গত এলাকার আমন ও শাক-সবজির খেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তিস্তা নদীর পানি বেড়ে আজ রোববার দুপুর ৩টা থেকে রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী এলাকায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া, ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও জিনজিরামসহ সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলা ও কুড়িগ্রামের তিন উপজেলায় নদী তীরবর্তী ১০০টি গ্রাম ও চর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। 

লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, লালমনিরহাট-ঢাকা রেলরুটের লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা রেল স্টেশনের কাছে প্রায় ৫০০ মিটার রেল লাইনের ওপর বন্যার পানি উঠে। এ কারণে রোববার সকাল থেকে ওই রুটে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। রোববার দুপুরের পর পানি কমায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে ওই স্থানে ট্রেন ধীরগতিতে চলাচল করছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা এলাকার পানিবন্দি কৃষক শামসুল আলম জানান, আজ ভোরে তাদের বাড়িতে ৩-৪ ফুট পানি ওঠে। তারা প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও গবাদিপশু-পাখি নিয়ে সরকারি রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। তার দশ বিঘা জমির আমন ধানের মধ্যে সাত বিঘা জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। প্রায় এক বিঘা জমির শাক-সবজি খেতও পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। 

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার অনেক গ্রামে ঘরের ভেতর ৪-৫ ফুট পানি। বাসিন্দারা ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর। তিস্তা নদীতে পানি বাড়লেই বন্যার কবলে পড়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় ।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “বন্যার পানিতে আমনের তেমন ক্ষতি হবে না। উল্টো বন্যার পানির কারণে আমনের উপকার হবে। তবে দ্রুত বন্যার পানি না নামলে পানির নিচে তলিয়ে থাকা শাক-সবজির ক্ষতি হবে।”

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, “অনবরত বৃষ্টি আর উজানের পানিতে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি না হলে আর উজান থেকে পানি আসা বন্ধ হলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্যা উপদ্রুত এলাকাগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করবে।”

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, “লালমনিরহাটে ১০ হাজার পানিবন্দি পরিবারের জন্য নগদ তিন লাখ টাকা ও ৯০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, শিশু খাদ্যের জন্য পাঁচ লাখ ও গোখাদ্যের জন্য পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজ সকাল থেকে পানিবন্দি এই পরিবারগুলোর মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।”

পালাবদল/এসএ


  সর্বশেষ খবর  
  সবচেয়ে বেশি পঠিত  
  এই বিভাগের আরো খবর  


Copyright © 2024
All rights reserved
সম্পাদক : সরদার ফরিদ আহমদ
নির্বাহী সম্পাদক : জিয়াউর রহমান নাজিম
ফোন : +৮৮-০১৮৫২-০২১৫৩২, ই-মেইল : [email protected]