বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা: রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠকের পর সরকারের দিক থেকে নির্বাচনের বিষয়ে সুষ্পষ্ট কোনো রোডম্যাপ না আসায় হতাশার কথা জানিয়েছে বিএনপি।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে হতাশা প্রকাশ করেন নেতারা। দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।
দলের এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, “ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ গঠনের জন্য অবিলম্বে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। এটিই সরকারের প্রধান এজেন্ডা হওয়া উচিত বলে বিএনপি মনে করে। এর অন্যথা হলে সরকারের প্রতি বিএনপি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।”
একইসঙ্গে গত ২৪ মে উপদেষ্টা পরিষদ যে বিবৃতি দিয়েছে তাকে ‘অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর’ বলে উল্লেখ করেছে দলটি।
দলের স্থায়ী কমিটির এই সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে তারা যেসব দাবি জানিয়েছিলেন সেগুলোর বিষয়েও সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক কিছু তারা এখনো পাননি।
“ইতিবাচক যে প্রতিক্রিয়া আশা করেছিলাম সেটা আমরা পাইনি। বরং নির্বাচন বিলম্বিত করার জন্য উসিলা বের করা হচ্ছে,” বলেছেন মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “বিভিন্ন মহলের অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি দাওয়া ও এখতিয়ার বহির্ভূত বক্তব্য সরকারের স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার যে অভিযোগ সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে, সেটা মূলত সরকারের অর্জন|”
“উপদেষ্টা পরিষদের দায়িত্ব পালনে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করে আসছি। সরকার পরিচালনায় নিরপেক্ষতার ঘাটতি ও দুর্বলতার কারণে জনমনে সংশয় ও সন্দেহের উদয় হওয়া স্বাভাবিক।”
এতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে ইশরাক হোসেনের গেজেট হলেও শপথের ব্যবস্থা আজও নেয়া হয়নি, “আশা করি কাল বিলম্ব না করে সরকার তার শপথের ব্যবস্থা নিবে।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা ও চরিত্র বজায় রাখার স্বার্থেই বিএনপি বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ চেয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাব খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য নানা উসিলা তৈরি করা হচ্ছে।
“এর একটা হলো বিচার। বিচার তো আমরাও চাই। বিএনপিই সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে আওয়ামী লীগের সময়ে। এরপরেও কেন প্রশ্ন আসে যে আমরা বিচার চাইবো না। বিএনপিই তাদের বেশি বিচার চায়।”
"তবে আমরা চাই স্বাধীন বিচার। স্বাধীন বিচার চাইবো, কিন্তু বলবো ওতো দিনের মধ্যে বিচার করতে হবে, সেটা তো হতে পারে না। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন এক সাথে চলতে পারে,” বলেছেন মোশাররফ হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ।