আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির সপ্তম বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টারের ব্যবহার থাকছে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
তিনি বলেন, “বিলবোর্ডের ব্যবহার অতীতে ছিল না, এটা ইন করা হচ্ছে। পোস্টারের ব্যবহার বাদ দেওয়ার ব্যাপারে সংস্কার কমিশনেরও একটা প্রস্তাব ছিল, আমরাও একমত হয়েছি। আমরা পোস্টারের ব্যবহার বাদ দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছি।”
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির সপ্তম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ইসি সানাউল্লাহ।
ব্যানার, ফেস্টুন ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, এসব বিষয়কেও নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, “প্রচার-প্রচারণায় পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারের ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। ভোটার স্লিপ ইন্ট্রোডিউস করার ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। টি-শার্ট, জ্যাকেট ইত্যাদির ব্যাপারে যে অতীতে বিধিনিষেধ ছিল, এ ব্যাপারে একটু শিথিল মনোভাব পোষণ করা হয়েছে।”
আজ কমিশনের এই সভায় আলোচ্যসূচি ছিল- রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০২৫ চূড়ান্তকরণ এবং সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত আলোচনা।
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, “আমরা প্রথম অ্যাজেন্ডা সম্পন্ন করতে পেরেছি, তবে সময়ের অভাবে এবং কিছু উপাত্ত বাকি থাকায় সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণী বিষয়ক আলোচনা আজ হয়নি। আগামী সপ্তাহের শেষ নাগাদ সংসদীয় আসনের সীমানার বিষয়টি সম্পন্ন হবে।”
তিনি জানান, “উল্লেখযোগ্য যে বিষয়গুলো এসেছে নতুনভাবে- প্রথমত: গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে আরপিওর ধারা ৯১ এর 'ঙ'-তে যা আছে প্রার্থিতা বাতিল করার, এটা ইতিপূর্বে আচরণবিধিতে সন্নিবেশিত ছিল না। এটাকে সন্নিবেশ করা হচ্ছে।”
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, “সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে যারা বিবেচিত হন, সেখানে উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যদেরও যোগ করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি ফ্যাসিলিটির ব্যবহার, যেমন: সার্কিট হাউস, ডাক বাংলো, রেস্ট হাউস, এগুলোর ওপর কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে।”
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা সভাপতি বা সদস্য হিসেবে পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন বা মনোনীত হয়েছেন, তাদের এই প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর সেখান থেকে পদত্যাগ করতে হবে বলেও জানান ইসি সানাউল্লাহ।
তিনি বলেন, “কারণ এইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাই প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকেন এবং এটা সংস্কার কমিশনেরও একটা সুপারিশের মধ্যে ছিল।”
নির্বাচন কমিশনার জানান, সরকারি ব্যক্তি, সরকারি প্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রপার্টি ইত্যাদি ব্যবহারের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা কঠোর করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে কোনো ধরনের ফরেন ইনভেস্টমেন্টকে না করা হয়েছে। কমনভাবে একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে সব প্রার্থী যাতে ইশতেহার ঘোষণা করতে পারেন বা করেন সেটার বিধান করা হয়েছে।
ইসি সানাউল্লাহ আরও বলেন, '“বিধিমালা লঙ্ঘনে যে নরমাল শাস্তি ছিল, আগে যেটা ছিল ছয় মাস কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, সেটাকে ছয় মাস কারাদণ্ড এবং দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। যা সংস্কার কমিশনের একটা প্রস্তাবনা ছিল।”
খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আচরণ বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হলো। তবে মনে রাখতে হবে যে, আচরণ বিধিমালার অনেকগুলো পরিবর্তন বা সংশোধন আরপিওর ওপর নির্ভরশীল, সুতরাং বর্তমানে যে এটা চূড়ান্ত হলে প্রকাশিত হয়ে যাবে আমাদের ওয়েবসাইটে, উপরে লেখা থাকবে আরপিও সংশোধন সাপেক্ষে।”