ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং - 'র' এর ওপর নিষেধাজ্ঞার যে সুপারিশ করেছে ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত মার্কিন কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)। শিখ নেতাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে ‘র’র বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে কমিশন।
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত সরকার।
গতকাল মঙ্গলবার ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ) এর বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২৫ প্রকাশিত হয় যেখানে 'র' এর মতো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ধর্মীয় স্বাধীনতা গুরুতরভাবে লঙ্ঘনের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি।
বুধবার সন্ধ্যায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের দেওয়া ওই বিবৃতিতে শুধু মার্কিন কমিশনের ওই প্রতিবেদনকে খারিজই করা হয়নি, ইউএসসিআইআরএফ-কে আন্তর্জাতিকভাবে একটি ‘উদ্বেগের সংস্থা’ (এনটিটি অফ কনসার্ন) হিসেবে চিহ্নিত করারও দাবি তুলেছে ভারত।
দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই সংস্থা যেভাবে পরিস্থিতির ‘পক্ষপাতপূর্ণ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ মূল্যায়ন’কে তাদের প্যাটার্ন করে তুলেছে এবং ‘তথ্যকে বিকৃত করে পেশ করছে’ তাতে ওই বর্ণনাই তাদের প্রাপ্য।
সরাসরি না বললেও ভারত ওই রিপোর্টটিকে কার্যত ‘ফেইক’ বলেই দাবি করেছে।
২০২৩ সালে নিউইয়র্কে একজন আমেরিকান শিখ নাগরিক হত্যাচেষ্টায় ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং - 'র' এর একজন কর্মকর্তা ও দেশটির ছয়জন কূটনীতিকের জড়িত থাকার অভিযোগ আবারো সামনে এনেছে যুক্তরাষ্ট্র ওই সংস্থা।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, মার্কিন ওই কমিশনের ২০২৫ সালের বার্ষিক রিপোর্ট তাদের নজরে এসেছে – কিন্তু আরও একবার সেখানে তাদের পক্ষপাতপূর্ণ ও রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিমূলক প্যাটার্নই পরিলক্ষিত হচ্ছে।
যেসংস্থা এরকম ‘এজেন্ডা-ভিত্তিক’ দাবি করে থাকে, তাদের অথেন্টিসিটি বা বৈধতা কতটা, সে প্রশ্নও তোলা হয়েছে।
“ইউএসসিআইআরএফ যেভাবে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে বারবার ভুলভাবে তুলে ধরতে চাইছে এবং ভারতের প্রাণবন্ত ও বহুত্ববাদী সমাজকে নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাইছে, তাতে বোঝা যায় ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে তাদের সত্যিকারের উদ্বেগ নেই – বরং এর পেছনে একটা ইচ্ছাকৃত ডিজাইন আছে”, মন্তব্য করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
ভারত আরও দাবি করেছে, ওই প্যানেল যে ভারতের আসল চিত্রটা তুলে ধরবে তারা সেটা আশাও করে না।
“১৪০ কোটি মানুষ এই দেশে থাকেন এবং পৃথিবীতে যতগুলো ধর্মের অস্তিত্ব আছে, তার সবগুলোর প্রতিনিধিত্ব এখানে আছে। কিন্তু ভারতের এই বহুত্ববাদী কাঠামো এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সম্প্রীতিতে ভরা সহাবস্থানকে ইউএসসিআইআরএফ স্বীকৃতি দেবে, এটা আমরা কখনও আশাও করি না,” বলা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
সোজা কথায়, রিপোর্টের যেটা মূল বক্তব্য – তার সবগুলোকেই ভারত সরাসরি অস্বীকার করেছে।