প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমে অসাধারণ পারফরম্যান্স উপহার দিলেন মারুফ মৃধা। ১৮ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার স্মরণীয় উপলক্ষ রাঙালেন ৬ উইকেট নিয়ে। তার পাশাপাশি আনিসুল ইসলাম জ্বলে ওঠায় একশর নিচে গুটিয়ে গেল রাজশাহী বিভাগ। তবে জবাব দিতে নেমে স্বস্তিতে নেই ঢাকা মেট্রো।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) দ্বিতীয় রাউন্ডে শনিবার রাজশাহীকে প্রথম ইনিংসে ৭৭ রানে অলআউট করে দিয়েছে ঢাকা মেট্রো। এরপর তারা প্রথম দিন শেষ করেছে ৫ উইকেটে ১৩৮ রান তুলে। দলটি এগিয়ে আছে ৬১ রানে।
সাভারের বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে ঢাকা মেট্রোর বোলারদের তোপের মুখে পড়ে রাজশাহী। শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে হারাতে থাকে উইকেট। ইনিংসের সর্বোচ্চ ২৩ রানের জুটি তারা পায় শেষ উইকেটে। দলটির মাত্র তিন ব্যাটার পৌঁছান দুই অঙ্কে। দশে নামা মোহর শেখ সর্বোচ্চ ১৯ রান করেন। বয়সভিত্তিক পর্যায়ে দ্যুতি ছড়ানো মারুফ ৬ উইকেট নেন ২২ রানে। আনিসুল ৩ উইকেট পান ১০ রানের বিনিময়ে।
ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমকে ফিরিয়ে রাজশাহীর ইনিংসে প্রথম আঘাত করেন মারুফ। মিজানুর রহমানকে রানের খাতা খুলতে দেননি আবু হায়দার রনি। আরেক ওপেনার সাব্বির হোসেন শিকার হন আনিসুলের।
প্রিতম কুমার ও শাখির হোসেনকে মারুফ ছেঁটে ফেলার পর ফরহাদ হোসেন ও অধিনায়ক সানজামুল ইসলামকে বিদায় করেন আনিসুল। এরপর শফিকুল ইসলাম, মেহেরব হাসান ও মোহরকে সাজঘরে পাঠিয়ে রাজশাহীর ইনিংস মুড়িয়ে দেন মারুফ।
প্রতিপক্ষকে অল্পতে বেঁধে ফেলার পর ক্রিজে সংগ্রাম করতে হয় ঢাকা মেট্রোর ব্যাটারদের। ৬৭ রানের মধ্যে আউট হন আনিসুল, অধিনায়ক নাঈম শেখ, আইচ মোল্লা ও মার্শাল আইয়ুব। পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন শামসুর রহমান শুভ ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। তাদের ৫০ রানের জুটি ভাঙেন সানজামুল। আমিনুল ৩২ রানে থামেন। ক্রিজে আছেন শামসুর ৩৭ ও তাহজিবুল ইসলাম ১২ রানে।
সিলেট একাডেমি মাঠে চট্টগ্রাম বিভাগকে প্রথম ইনিংসে ১৯৮ রানে থামিয়েছে সিলেট বিভাগ। তবে বোলারদের উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের পর ব্যাটারদের বিবর্ণতায় বিপাকে পড়েছে তারা। দিনশেষে সিলেটের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১১৪ রান। তারা পিছিয়ে আছে ৮৪ রানে।
এক পর্যায়ে ৪ উইকেটে ১৫৪ রানে পৌঁছে গিয়েছিল চট্টগ্রাম। কিন্তু এরপর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে দলটির ব্যাটিং লাইনআপ। শেষ ৬ উইকেট তারা হারায় মাত্র ৪৪ রানে। তাদের পক্ষে একমাত্র ফিফটি করেন ইয়াসির আলী রাব্বি। তিনি ৭৩ রানের ইনিংস খেলে নবম ব্যাটার হিসেবে আউট হন। ৯১ বলের ইনিংসে ৯ চার ও ৩ ছক্কা হাঁকান তিনি।
সিলেটের পক্ষে রেজাউর রহমান রাজা ও তোফায়েল আহমেদ ৩ উইকেট করে নেন। ২ উইকেট পান আবু জায়েদ রাহী। একটি করে উইকেট দখল করেন নাঈম হাসান ও নাসুম আহমেদ।
ব্যাটিংয়ে নেমে সিলেটের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। ২২ রানের মধ্যে আউট হন দুই ওপেনার তৌফিক খান তুষার ও জাকির হাসান। সিলেটকে নেতৃত্ব দেওয়া জাকির আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় টেস্টের স্কোয়াডে। তিনি ১৭ বলে করেন ১৩ রান।
পিনাক ঘোষ ও অমিত হাসান চাপ সামলে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি তারা। মাইশুকুর রহমান আউট হন প্রথম বলে। দিনের বাকি সময় পার করেন আবদুল্লাহ আল গালিব ও নাইটওয়াচম্যান নাসুম।
জাতীয় লিগের অন্য দুটি ম্যাচের প্রথম দিনের খেলা মাঠে গড়াতে পারেনি বৃষ্টি ও ভেজা মাঠের কারণে। খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে বরিশাল বিভাগ ও খুলনা বিভাগ এবং বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে রংপুর বিভাগ ও ঢাকা বিভাগের ম্যাচে টস করাই সম্ভব হয়নি।