উইসকনসিনের এক নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিপক্ষ কমলা হ্যারিসকে জন্মগতভাবে ‘মানসিক প্রতিবন্ধী’ বলে আখ্যা দেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় মেতে উঠেছেন ট্রাম্প-কমলা। ক্ষেত্রবিশেষে কমলার প্রতি ট্রাম্পের কটূক্তি সভ্যতা-ভব্যতার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
উইসকনসিনের এক নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিপক্ষ কমলা হ্যারিসকে জন্মগতভাবে 'মানসিক প্রতিবন্ধী' বলে আখ্যা দেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গতকাল সোমবার যুক্তরাজ্যের পত্রিকা গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
তার এই শব্দচয়ন নিয়ে নিজ দলেই সমালোচিত হয়েছেন ট্রাম্প। অস্বস্তিতে পড়েছেন রিপাবলিকান পার্টির অনেক নেতাকর্মীও। প্রকাশ্যে ট্রাম্পের এই কৌশলের সমালোচনাও করেছেন কেউ কেউ।
পাঁচ নভেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই দলের বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে অভিবাসন ও সীমান্ত নিরাপত্তা নীতি। এই ইস্যুতে হ্যারিসের সমালোচনা করতে যেয়ে উইসকনসিনে বিতর্কিত কিছু শব্দচয়ন করেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, 'কমলা মানসিক প্রতিবন্ধী। যদি কোনো রিপাবলিকানের অধীনে এভাবে অপরাধ ও অপকর্ম বেড়ে যেত, তাহলে সে নিশ্চিতভাবে অভিশংসনের শিকার হতো। তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতো'।
“বাইডেন তো (বয়সের জন্য) মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছেন। কিন্তু কমলার জন্মই হয়েছে প্রতিবন্ধী হিসেবে। কেবল একজন মানসিক প্রতিবন্ধীই আমাদের দেশের এই হাল করতে পারে,” যোগ করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের এমন শব্দচয়নে অনেক শীর্ষ রিপাবলিকান নেতা অস্বস্তির মধ্যে পড়েছেন।
রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসি গ্রাহাম সিএনএনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমার মনে হয় এসব কথাবার্তা না বলে কমলার নীতিগুলো কীভাবে দেশকে ধ্বংস করছে তা নিয়ে কথা বলা উচিত। আমি বলব না সে (কমলা) পাগল। তবে তার নীতিগুলো পাগলাটে।”
মেরিল্যান্ডের রিপাবলিকান গভর্নর ল্যারি হোগান সিবিএস নিউজকে বলেন, “ট্রাম্পের এই মন্তব্য শুধু ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্যই অপমানজনক না, মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্যও অপমানজনক।”
প্রতিপক্ষকে এভাবে আক্রমণ করা ট্রাম্পের জন্য নতুন কিছু না। প্রতিপক্ষকে বিতর্কিত ডাকনাম দেওয়ার জন্যও বিখ্যাত তিনি। কমলা হ্যারিসকে প্রায় সময় ‘কমরেড কমলা’ বলে সম্বোধন করে থাকেন তিনি।
কমলা শিবিরও এর জবাবে কিছু আগ্রাসী শব্দচয়ন করছে। ট্রাম্প ও তার রানিং মেট জেডি ভ্যান্সকে ‘আজব’ প্রার্থী বলে আখ্যায়িত করেছে তারা।
ট্রাম্পের শব্দচয়ন নিয়ে ইলিনয়ের ডেমোক্র্যাটিক গভর্নর জেবি প্রিৎজকার সিএনএনকে বলেন, “আপনার বুঝতে হবে, ট্রাম্প যখন এসব কথা বলেন, তিনি আসলে নিজের ব্যাপারেই বলছেন। আরেকজনের মধ্যে নিজের ছায়া দেখার চেষ্টা করেন তিনি।”
প্রিৎজকারের মতে, নিজের বুদ্ধিবৃত্তিক অবনতি হচ্ছে দেখেই কমলাকে এই কথা বলেছেন ট্রাম্প।
এমএসএনবিসিকে তিনি বলেন, “জো বাইডেনের বুদ্ধিবৃত্তিক অবনতি নিয়ে তো অনেক কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। এখন চিন্তা করুন, এখনই তার যে অবস্থা, তিন-চার বছর পর কী হবে?”