ঢাকা: ছয় সংস্কার কমিশন পুরোদমে কাজ শুরুর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ আলোচনা করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে মূলত এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে মূলত এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টার এই সফরকে খুবই সফল ও ঐতিহাসিক অভিহিত করেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানান। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। আর সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে প্রথমে বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিকের নাম ঘোষণা করা হলেও পরে তা পরিবর্তন করে অধ্যাপক আলী রীয়াজকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে কমিশনের কাজ শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত ছয় সংস্কার কমিশন গঠনের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। সরকারের চাওয়া হলো কাজ শেষে কমিশনগুলো আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, কমিশনের কাজ আগামীকাল থেকে শুরু করার কথা। কিন্তু একটি সিদ্ধান্ত এসেছে তার আগে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদ আরেক দফা আলোচনা করতে চাচ্ছে।
“কমিটির প্রধানদের যখন নাম ঘোষণা হয়েছে, তখন কমিশনের কাজ কিছুটা হলেও শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো এখানে অংশীজন। তাদের সঙ্গে আলাপ হবে, তাদের মতামত চাওয়া হবে,” বলেন তিনি।
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আলোচনাটা খুব দ্রুত হবে, এইটুকু আমি বলতে পারি। আলোচনা হওয়ার পরই পরেই দেখবেন কমিশনের কাজ শুরু হয়েছে।”
সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে, আওয়ামী লীগের সঙ্গেও কি আলোচনা হবে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, “এটা উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে কথা বলে জানতে হবে। তারা তো ইনভাইট করছে।”
গণমাধ্যমকর্মীদের আরেক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল বলেন, “বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নেতা কেউ (অন্তর্বর্তী সরকারের) সময়সীমা জানতে চাননি। তারা জানেন যে, বাংলাদেশে এই কাজগুলো হবে। অনেকগুলো কমিশন, এ ক্ষেত্রে সময় লাগবে।”
তিনি বলেন, “তারা পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। কমিশনের রিপোর্ট, রাজনৈতিক দলগুলো মত, তার পর গিয়ে সময়সীমার ব্যাপারটা আসে যে নির্বাচন কবে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর।